দৈনন্দিন জীবনে এমন অনেক ছোট ছোট ঘটনা ঘটে, যেগুলোর বৈজ্ঞানিক কারণ আমরা না বুঝেই এড়িয়ে যাই। তেমনি একটি সাধারণ ঘটনা হলো, দীর্ঘক্ষণ পানিতে থাকলে আঙ্গুলের চামড়া কুঁচকে যাওয়া। যদিও কিছুক্ষণ পর তা আবার স্বাভাবিক হয়ে যায়, কিন্তু এর পেছনের কারণ এবং এটি কোনো শারীরিক সমস্যার ইঙ্গিত কিনা, তা নিয়ে অনেকেই কৌতূহলী থাকেন।
এই বিষয়টি নিয়ে প্রায় সবাই কমবেশি ভেবেছেন। সাধারণত শীতকালে এই প্রবণতা বেশি দেখা গেলেও, বছরের যেকোনো সময় এটি ঘটতে পারে। কিন্তু কেন এমনটা হয়?
আমাদের ত্বকের উপরিভাগে ‘সিবাম’ নামক একটি তৈলাক্ত পদার্থ থাকে। এই সিবামের প্রধান কাজ হলো ত্বককে সুরক্ষিত রাখা এবং এর আর্দ্রতা বজায় রাখা, যাতে ত্বক অতিরিক্ত রুক্ষ বা শুষ্ক না হয়ে যায়। তবে, একটানা দীর্ঘক্ষণ জলের সংস্পর্শে থাকলে এই সিবাম পদার্থটি ধুয়ে যায়। সিবাম সরে গেলে জল সরাসরি ত্বকের গভীরে প্রবেশ করতে পারে, যার ফলেই আঙ্গুলের চামড়া ওইভাবে কুঁচকে যায়, অনেকটা স্পঞ্জের মতো।
এই ঘটনা কেবল হাতের আঙ্গুলেই নয়, দীর্ঘক্ষণ জল ঘাঁটলে পায়ের নিচের ত্বকও কুঁচকে যেতে দেখা যায়। যদিও কিছুক্ষণ পর এটি আবার স্বাভাবিক হয়ে যায়। তবে এই বিষয়টি নিয়ে অনেকে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং ভাবেন এটি কোনো শারীরিক সমস্যার কারণে হচ্ছে কিনা।
তবে চিকিৎসকরা এ বিষয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তাদের মতে, আঙ্গুলের চামড়া কুঁচকে যাওয়া একটি স্বাভাবিক স্নায়বিক প্রক্রিয়ার অংশ। বরং, যদি হাত-পায়ের স্নায়ু সচল না থাকে, তবে এমনটা নাও হতে পারে। অর্থাৎ, স্নায়ুজনিত কোনো সমস্যা থাকলে বা স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হলে জলের সংস্পর্শে আসার পরও ত্বকের এই স্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা যাবে না। তাই চিকিৎসকরা আশ্বস্ত করে বলছেন যে, আঙ্গুলের চামড়া কুঁচকে যাওয়া নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, বরং এটি একটি সুস্থ ও স্বাভাবিক দেহের লক্ষণ।
