সিরাজগঞ্জে সবজি ব্যবসায়ী হত্যা মামলায় ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড, পলাতক সকল আসামি

নিজেস্ব প্রতিবেদক

সিরাজগঞ্জের সবজি ব্যবসায়ী নাজমুল ইসলামকে অপহরণ ও হত্যার চাঞ্চল্যকর মামলায় ছয়জন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২০ মে, ২০২৫) সকালে সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এম আলী আহমেদ এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত সকল আসামিই পলাতক ছিলেন।

 

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন গাইবান্ধা জেলার পারধুন্দিয়া গ্রামের মো. খাজা মিয়া, হরিনাথপুর বিষপুকুর গ্রামের মো. এনামুল, দরগাপাড়া গ্রামের মো. মোজাহিদ, পারধুন্দিয়ার মো. বসু, মাদারদহ পূর্বপাড়া গ্রামের মো. সাইদুল ইসলাম এবং রামনগর (হাটবাড়ি) গ্রামের মো. মিলন সরকার। এই মামলায় মোট সাতজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল, কিন্তু বিচার চলাকালে আসামি মো. সাইফুল ইসলাম মারা যাওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

 

আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট শাকিল মোহাম্মদ শরিফুর হায়দার (রফিক সরকার) এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট মো. আবুল কালাম আজাদ এবং স্টেট ডিফেন্স পক্ষে অ্যাডভোকেট মো. আব্দুর রাজ্জাক আতা উপস্থিত ছিলেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১০ আগস্ট দুপুরে নওগাঁর চকগৌরী বাজার থেকে সবজি কিনে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন ব্যবসায়ী নাজমুল ইসলাম। বাইপাইলের একটি কাঁচাবাজারে সবজি পৌঁছানোর বিষয়টি তিনি স্ত্রী রাবেয়া খাতুনকে ফোনে নিশ্চিত করেছিলেন। কিন্তু এর পরদিন, ১১ আগস্ট থেকে নাজমুলের সঙ্গে তার পরিবারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

 

সেদিন রাত ১২টার দিকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি ফোন করে জানায়, নাজমুলকে গাজীপুরের চান্দুরা এলাকা থেকে একটি কালো মাইক্রোবাসে অপহরণ করা হয়েছে এবং মুক্তিপণ বাবদ ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। একই রাতে আবারও ফোন করে জানানো হয় যে, নাজমুলকে মারধর করা হয়েছে এবং সে কথা বলতে পারছে না। পরদিন সকালে একটি বিকাশ নম্বরে টাকা পাঠাতে বলা হয়।

 

তবে দুঃখজনকভাবে, ১২ আগস্ট সকালে স্থানীয় একটি এনজিও কর্মকর্তা মো. আব্দুল কুদ্দুস ফোনে জানান, নাজমুলের মরদেহ সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানাধীন হাটিকুমরুল এলাকার রূপসী বাংলা হোটেলের পাশে পাওয়া গেছে। মরদেহের মাথায় ছিল গভীর আঘাতের চিহ্ন। সলঙ্গা থানা পুলিশ মরদেহের শরীর থেকে পাওয়া একটি এনজিও কাগজের সূত্র ধরে আত্মীয়দের খবর দেয়। পরে পরিবার গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করে।

 

মামলার চার্জশিট অনুযায়ী, অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায় না হওয়ায় নাজমুলকে হত্যা করে রাতের আঁধারে রাস্তার পাশে ফেলে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতিকারীরা। এই ঘটনায় নাজমুলের বাবা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছিলেন।

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ