রিশাদের স্পিন ঘূর্ণিতে পিএসএল ফাইনালে লাহোর কালান্দার্স

নিজেস্ব প্রতিবেদক

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ব্যস্ততা সেরে পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) যোগ দিয়েই বাজিমাত করলেন বাংলাদেশি স্পিনার রিশাদ হোসেন। এলিমিনেটর ম্যাচে অনুপস্থিত থাকলেও, ফাইনালে ওঠার গুরুত্বপূর্ণ লড়াইয়ে ফিরে এসেই তিনি লাহোর কালান্দার্সকে এনে দিলেন এক রোমাঞ্চকর জয়। বাংলাদেশের আরেক তারকা সাকিব আল হাসানের ব্যর্থতার দিনে রিশাদ একাই নিলেন ৩ উইকেট, যার সুবাদে দুইবারের শিরোপাজয়ী লাহোর এবারও ফাইনালে জায়গা করে নিল। লিগপর্বে দারুণ দাপট দেখানো ইসলামাবাদ ইউনাইটেডকে ৯৫ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে দিল লাহোর।

রানের পাহাড় ও রিশাদের জাদু
লাহোরের ঐতিহাসিক গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে গতকাল (শুক্রবার) অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে শাহীন আফ্রিদির নেতৃত্বাধীন লাহোর কালান্দার্স টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে তারা গড়ে ২০২ রানের বিশাল সংগ্রহ। এই চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শাদাব খানের ইসলামাবাদ ইউনাইটেড, রিশাদ, শাহিন এবং সালমান মির্জার বিধ্বংসী বোলিং আক্রমণের সামনে একেবারেই দাঁড়াতে পারেনি। মাত্র ১৫.১ ওভারেই তারা ১০৭ রানে গুটিয়ে যায়, যা লাহোরকে ৯৫ রানের বড় জয় এনে দেয়।

 

লাহোরের ব্যাটিং দাপট ও সাকিব-রিশাদের পারফরম্যান্স

 

লাহোরের পক্ষে ব্যাটিংয়ে নেমে ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম এবং শ্রীলঙ্কার মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান কুশল পেরেরা দলকে বড় পুঁজি এনে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। নাঈম মাত্র ২৫ বলে ৫০ রান করেন, যার মধ্যে ছিল ৭টি চার ও ২টি ছক্কা। কুশল পেরেরা ৩৫ বলে ৬১ রানের একটি ঝোড়ো ইনিংস খেলেন, যেখানে তিনিও সমান ৭টি চার ও ২টি ছক্কা হাঁকান। তবে, বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ব্যাট ও বল উভয় বিভাগেই ব্যর্থ হন। আগের ম্যাচের মতোই তিনি এবারও রানের খাতা না খুলেই (ডাক) আউট হন। রিশাদ হোসেন ২ বল খেলে একটি চারের সাহায্যে ৫ রান করে রানআউট হন।

 

ইসলামাবাদকে গুঁড়িয়ে দেওয়া বোলিং আক্রমণ

 

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইসলামাবাদ ইউনাইটেড শুরু থেকেই ছিল দিশেহারা। তাদের ইনিংসে প্রথম আঘাত হানেন অধিনায়ক শাহীন আফ্রিদি, যিনি ইনিংসের প্রথম ওভারেই মোহাম্মদ শেহজাদকে তুলে নেন। পরের ওভারেই সালমান ফিরিয়ে দেন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক শাহিবজাদা ফারহানকে। মাত্র ৩ রানেই ২ উইকেট হারিয়ে সাবেক চ্যাম্পিয়ন ইসলামাবাদ চাপে পড়ে যায়। এরপর সালমান আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নেন, র্যাসি ফন ডার ডুসেন এবং ইমাদ ওয়াসিমকে ফিরিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ আরও নিজেদের দিকে নিয়ে আসেন।

 

এরপরই আসে রিশাদের পালা। ইসলামাবাদ ৩৩ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর সালমান আগা এবং শাদাব খান মিলে ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করেন। কিন্তু রিশাদ দ্রুত ১৬ রানের ব্যবধানে এই দুজনকেই প্যাভিলিয়নে পাঠান। এরপর তিনি জিমি নিশামকেও আউট করে লাহোরকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যান। লাহোরের অধিনায়ক শাহীন আফ্রিদি বাকি কাজটুকু সম্পন্ন করেন, ইসলামাবাদের শেষ দুটি উইকেট তার দখলেই যায়। শেষ পর্যন্ত ১০৭ রানে অলআউট হয় ইসলামাবাদ।

ইসলামাবাদের পক্ষে সালমান আগা সর্বোচ্চ ৩৩ রান এবং শাদাব খান ২৬ রান করেন। এছাড়া আর কোনো ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি। লাহোরের পক্ষে রিশাদ হোসেন, সালমান মির্জা এবং শাহীন আফ্রিদি প্রত্যেকেই ৩টি করে উইকেট শিকার করেন। রিশাদ ৩৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট এবং সালমান মাত্র ১৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট লাভ করেন।

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ