আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস আজ! ১০ দেশে শান্তির পতাকা হাতে বাংলাদেশের শান্তি রক্ষীরা

নিজেস্ব প্রতিবেদক

ছবি : সংগ্রহীত

 

নীল হেলমেট’ পরে বিশ্বশান্তির মঞ্চে বাংলাদেশের পথচলা শুরু ১৯৮৮ সালে। তখন জাতিসংঘের ইরান-ইরাক সামরিক পর্যবেক্ষক মিশনে ১৫ জন সদস্য পাঠিয়েছিল বাংলাদেশ। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে ১০ দেশে শান্তির পতাকা হাতে নিয়োজিত আছেন ৪৪৪ নারীসহ ৫ হাজার ৮১৮ শান্তিরক্ষী।

 

বিশ্বশান্তি রক্ষার এ যাত্রায় ৩৫ বছরে জীবন দিয়েছেন ১৬৮ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী। আহত হয়েছেন অন্তত ২৫৭ জন। পেশাদারত্বের মাধ্যমে শান্তি রক্ষা মিশনে সৈন্য প্রেরণকারী শীর্ষ দেশগুলোর তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। বর্তমানে বাংলাদেশ তৃতীয় শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ।

 

আজ বৃহস্পতিবার পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস। এদিন বিশ্বজুড়ে সম্মান জানানো হবে সেসব বীরকে, যাঁরা শান্তির পতাকা হাতে যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে দায়িত্ব পালন করেছেন। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালন করছে।

“শান্তি রক্ষা মিশনে বাংলাদেশের দক্ষতা ও কর্মক্ষমতার ব্যাপক সুনাম রয়েছে। তবে মিশনের ধরন পাল্টে যাচ্ছে। নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ আসছে। সেটার সঙ্গে বাংলাদেশকে নতুনভাবে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। বিশেষ করে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। – বলেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল (অব.) আ ন ম মুনীরুজ্জামান

বিশ্বজুড়ে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত সাহসী নারী-পুরুষদের সেবা ও ত্যাগকে স্মরণ করে এই দিবসটি পালিত হচ্ছে। বাংলাদেশও এই দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে উদযাপন করছে।

বাংলাদেশ পুলিশের শান্তিরক্ষী বাহিনী ১৯৮৯ সালে নামিবিয়া মিশনের মাধ্যমে তাদের যাত্রা শুরু করে। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত ২৪টি দেশের ২৬টি মিশনে ২১ হাজার ৮১৫ জন বাংলাদেশি পুলিশ সদস্য পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ পর্যন্ত ২৪ জন বাংলাদেশি পুলিশ শান্তিরক্ষী বিশ্বশান্তি রক্ষায় তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন।

বর্তমানে কঙ্গো, দক্ষিণ সুদান ও মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে জাতিসংঘ মিশনে বাংলাদেশ পুলিশের ১৯৯ জন সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন, যার মধ্যে ৭১ জন নারী। নারী পুলিশ সদস্যরা ২০০০ সাল থেকে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন এবং এ পর্যন্ত ১ হাজার ৯২৭ জন নারী শান্তিরক্ষী বিভিন্ন মিশনে সফলতার সঙ্গে কাজ করেছেন।

শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশ সদস্যদের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজ করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন দেশের পুলিশিং পদ্ধতি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন এবং বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা বিনিময় তাদের পেশাদারিত্বকে আরও সমৃদ্ধ করেছে। এই অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের পুলিশিং ব্যবস্থায়ও ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে, বিশেষ করে জনমুখী ও গণতান্ত্রিক পুলিশিং কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রেখেছে।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ পুলিশের সক্রিয় অংশগ্রহণ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। দেশের অভ্যন্তরে সেবামূলক পুলিশিংয়ের পাশাপাশি বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ পুলিশের অঙ্গীকার অব্যাহত রয়েছে। এই দিবসে সকল শান্তিরক্ষীর সাহসিকতা ও ত্যাগকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হচ্ছে।

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ