১৪৪০ টাকার ধান বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ টাকায়, বাজার সিন্ডিকেটের দখলে ধান

নিজেস্ব প্রতিবেদক

ছবি : সংগ্রহীত

বোরো ধানের মৌসুমে এবারও ন্যায্য দাম না পেয়ে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন উত্তরবঙ্গের হাজারো কৃষক। উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার পরও ধানের বাজারমূল্য কমে যাওয়ায় ক্ষোভ আর হতাশায় ভুগছেন তারা। সরকারিভাবে কৃষকের কাছ থেকে প্রতি মণ ধানের মূল্য ১৪৪০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও, বাস্তবে ৮৫০ থেকে ১০২০ টাকা দরে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।

 

কৃষকদের দাবি, এক বিঘা জমি চাষ করতে তাদের গড়ে ২০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে, কিন্তু ধান বিক্রি করে তারা পাচ্ছেন সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। ফলে মাথাপিছু কয়েক হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। একজন কৃষক হতাশার সুরে বলেন, “বাড়িতে টাকা নেই, বাজারে যেতে হলেও ধান বিক্রি করতে হচ্ছে – অথচ যে দামে বিক্রি হচ্ছে, তাতে খরচই উঠে আসছে না।”

 

কৃষকরা অভিযোগ করছেন, বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। তারা কৃষকদের কাছ থেকে কম দামে ধান কিনে মিলমালিকদের কাছে বিক্রি করে দ্বিগুণ দামে। এই প্রক্রিয়ায় কৃষকরা বছরের পর বছর বঞ্চিত হচ্ছেন ন্যায্য মূল্য থেকে।

 

এদিকে কৃষি বিভাগ বলছে, সরকার যে মূল্য নির্ধারণ করে তা কৃষক পাচ্ছে কিনা, তা নিশ্চিত করার কোন কার্যকরী তদারকি ব্যবস্থা নেই। তারা বলছেন, প্রতি মৌসুমেই একটি পর্যবেক্ষণ ও মনিটরিং টিম থাকা উচিত, যারা মাঠপর্যায়ে কৃষকদের অভিযোগ শুনে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারে।

 

কৃষক সংগঠনের নেতারা বলছেন, সরকারিভাবে ভুল নীতির কারণে প্রতিবছর কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এই অবস্থার পরিবর্তন না হলে প্রান্তিক কৃষকেরা একের পর এক জমি হারিয়ে ভূমিহীন হয়ে পড়বেন।

 

এবার উত্তরবঙ্গ বিভাগে ধান উৎপাদন হয়েছে ৪৬ লাখ মেট্রিক টন। অথচ সরকার কিনেছে মাত্র ৫৫ হাজার মেট্রিক টন ধান, যা মোট উৎপাদনের এক শতাংশেরও কম। এর ফলে বাজারে ধানের অতিরিক্ত জোগান তৈরি হয়ে দাম আরও পড়ে গেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ