ছবি : সংগ্রহীত
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এক জরুরি বৈঠকে ইরানের ওপর সাম্প্রতিক মার্কিন-ইসরায়েলি হামলার তীব্র নিন্দা জানালো রাশিয়া। রাশিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি ভাসিলি নেবেনজিয়া বক্তব্যে অভিযোগ করেন, যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালিয়ে শুধু ইরানের সার্বভৌমত্বই লঙ্ঘন করেনি, বরং পারমাণবিক দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে। এছাড়া, তিনি নিরাপত্তা পরিষদের “দ্বিমুখী নীতি” ও ইসরায়েলকে নিয়ে নীরবতার সমালোচনা করে বলেছেন, “আন্তর্জাতিক শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার নামে কৌশলগত পক্ষপাতিত্ব চলছে।”
জাতিসংঘে রাশিয়ার প্রতিনিধি ভাসিলি নেবেনজিয়া স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু বিকিরণের ঝুঁকি উপেক্ষা করে ইরানে হামলা চালিয়েছে; আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিন্দা করি।”
তিনি আরও যোগ করেন, “ইরান আইএইএ (ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি)-এর সঙ্গে সর্বাধিক সহযোগিতা করেছে, অথচ ইসরায়েল, যার এই সংস্থার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই, তারা ইরানকে লক্ষ্য করেছে। এটি হাস্যকর ও অযৌক্তিক।”
নেবেনজিয়া নিরাপত্তা পরিষদের সমালোচনা করে বলেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘ এমনভাবে আচরণ করছে যেন ইসরায়েল ইরানে হামলা করেইনি।” আলোচনা চলাকালে এই হামলাকে তিনি “অশান্তিকর ও কূটনৈতিক সমাধানকে ধ্বংসকারী” বলে উল্লেখ করেন।
মূল অভিযোগ হিসেবে রাশিয়া জানায়-
– নিরাপত্তা পরিষদ ইরানকে “যুদ্ধ প্ররোচনাকারী” হিসেবে চিত্রিত করছে, অথচ ইসরায়েলের আগ্রাসন উপেক্ষা করা হচ্ছে।
– আইএইএ’র সঙ্গে ইরানের সম্পূর্ণ সহযোগিতা সত্ত্বেও ইসরায়েলের হামলা বৈশ্বিক নিরাপত্তা কাঠামোকে দুর্বল করছে।
– মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলা আঞ্চলিক অস্থিরতা বাড়ানোর জন্য পরিকল্পিত।
রাশিয়ার এই বক্তব্যের পর পশ্চিমা দেশগুলোর পক্ষ থেকে পাল্টা যুক্তি আসলেও চীন, সিরিয়া ও ইরানের সমর্থনে বক্তব্য রাখে। অনেক নিরপেক্ষ রাষ্ট্রই এই সংঘাতের দ্রুত সমাধান চেয়েছে।
এই উত্তপ্ত বিতর্কের মধ্যেই বিশ্বজুড়ে বাড়ছে উদ্বেগ, যুক্তরাষ্ট্র-ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে কি না। রাশিয়ার এই হুঁশিয়ারি আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে, যেখানে জাতিসংঘের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
