রাজনৈতিক টানাপোড়েনে রোহিতদের বাংলাদেশ সফর স্থগিতের শঙ্কা: বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন

নিজেস্ব প্রতিবেদক

ছবি : সংগৃহীত

আগামী আগস্টে তিনটি ওয়ানডে ও তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সিরিজ খেলতে ভারতীয় ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফরে আসার কথা ছিল। তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পালাবদল এবং ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমান কূটনৈতিক সম্পর্কের জেরে এই সফর নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) বাংলাদেশকে সরকারের অনুমতির অপেক্ষায় থাকার কথা জানিয়েছিল, আর এখন খবর আসছে যে সিরিজটি স্থগিত হতে চলেছে।

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন অনুযায়ী, দিল্লিতে একাধিক শীর্ষস্থানীয় সরকারি সূত্র ইঙ্গিত দিয়েছে যে, বাংলাদেশ সফর নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সবুজ সংকেত পায়নি বিসিসিআই। এর পেছনে পুরোপুরি ‘রাজনৈতিক কারণ’ রয়েছে এবং ভারত সরকার এই মুহূর্তে ভারতীয় ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফরে সায় দিচ্ছে না। তবে, সিরিজটি এই মুহূর্তে না হলেও পরবর্তীতে সময়সূচি পুনঃনির্ধারিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

 

দিল্লি মনে করছে, বর্তমান শীতল কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি নিয়ে ভারতে যে ধরনের ‘বিরূপ মনোভাব’ দেখা যাচ্ছে, তাতে এই মুহূর্তে গিল-রাহুলদের সফর কোনো ইতিবাচক বার্তা দেবে না। বাংলাদেশ-ভারতের এই ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলার কথা ছিল ১৭ থেকে ৩১ আগস্টের মধ্যে। সরকারের এই মনোভাব জানার পর বিসিসিআই এই সফর ‘রিশিডিউল’ করার জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করেছে, যা বিসিবির কর্মকর্তারাও নিশ্চিত করেছেন।

 

একাধিক সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় দল বাংলাদেশে সিরিজ খেলতে গেলে তা সাধারণ ভারতীয়দের মধ্যে একটি ভুল বার্তা দেবে বলে সরকারের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন। সফরটি এখন অনুষ্ঠিত হলে তাতে রাজনৈতিক ঝুঁকি আছে বলে ভারত সরকার মনে করছে। অন্যদিকে, সফর স্থগিত হলে ভারতের ক্রিকেটের তেমন একটা ক্ষতি হবে না। আর ঠিক এই কারণেই আগস্টে ভারতীয় দলের বাংলাদেশ সফর এখন এতটা অনিশ্চিত হয়ে উঠেছে।

 

এর বাইরে, দুই দলের এই সিরিজে কোনো টেস্ট ম্যাচ নেই। ফলে সফর বাতিল হলেও বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট টেবিলে প্রভাব পড়ার কোনো আশঙ্কা নেই ভারতের। এই শঙ্কা নিয়েই গত বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ভারত দুটি টেস্ট ম্যাচ ও তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সিরিজ বাতিল করেনি। ভারতীয় সমর্থকদের একটি অংশ ক্রমাগত হুমকি দিয়ে গেলেও বাংলাদেশ নির্বিঘ্নেই সেই সিরিজ খেলে আসে, যদিও সেই সিরিজে সাকিব-শান্তরা তেমন পাত্তা পাননি।

এদিকে, এই সিরিজটি পিছিয়ে গেলেও বাংলাদেশ-ভারত ক্রিকেটীয় সম্পর্কে তেমন বিরূপ প্রভাব পড়বে না বলেই আশাবাদী বিসিসিআই। একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “বাংলাদেশ আর পাকিস্তান এক নয়, এটা আমাদের মনে রাখতে হবে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক বহু বছরের। এখন যদি কোনো কারণে সিরিজ না-ও হতে পারে, কিছুদিন পরে সেটা করা যাবে নিশ্চিতভাবেই। বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদা পাওয়ারও অনেক আগে থেকে দুই দেশের ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যে যে আস্থা ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক আছে, দ্বিপাক্ষিক সিরিজ নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা তৈরি হলেও সেটা সাময়িক।”

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ