আওয়ামীলীগ নেতাদের ভারতে আশ্রয় নিয়ে মমতার বিতর্কিত মন্তব্য, মোদী সরকারকে লক্ষ্য করে প্রশ্ন

নিজেস্ব প্রতিবেদক

ছবি : সংগৃহীত

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ নেতাদের ভারতে আশ্রয় নেওয়ার বিষয়ে সরাসরি মোদী সরকারকে ইঙ্গিত করেছেন। বৃহস্পতিবার নিউটাউনে এক অনুষ্ঠানে তিনি অভিযোগ করেন, ভারত সরকারের মদদেই কিছু আ.লীগ নেতা কলকাতায় অবস্থান করছেন। নাম উল্লেখ না করে মোদি সরকার কে আক্রমণ করে তিনি বলেন, “কয়েকজন অতিথিকে তো ভারত সরকার রেখে দিয়েছে। আমি কি তাতে বাধা দিয়েছি? দিইনি। কারণ, এখানে রাজনৈতিক বিষয় আছে।”

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যে স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলেছে যে, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে আ.লীগের কিছু নেতা-কর্মী ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি বলেন, “পার্শ্ববর্তী দেশ বিপদে পড়েছে বা ভারত সরকারের অন্য কোনো বিষয় আছে। কই, এ নিয়ে তো আমরা কোনোদিন কিছু বলিনি। তাহলে আপনারা কেন ‘বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশি’ এমন তকমা দিচ্ছেন?”

“বাংলাদেশিদের নিয়ে এত সমস্যা হলে সরকারই কেন তাদের রাখে?”
মুখ্যমন্ত্রী কট্টর ভাষায় প্রশ্ন তোলেন, “বাংলাদেশিদের নিয়ে যদি এত সমস্যা হয়, তাহলে কিছু বাংলাদেশিকে ভারত সরকার অতিথি করে রেখেছে কেন? তাদের রাখা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কোনো আপত্তি করেনি।”তিনি এও যোগ করেন, “১৯৭১ সালের ইন্দিরা-মুজিব চুক্তির ফলে ভারতে আসা উদ্বাস্তুরা সবাই ভারতের নাগরিক। বাংলাদেশি কোনোভাবেই নয়।”

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাভাষীদের ওপর বৈষম্যের কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “একজন ভারতীয় দেশের যেকোনো জায়গায় যেতে পারেন। কিন্তু বাংলায় কথা বললেই তাদের বাংলাদেশি বা রোহিঙ্গা বলে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হচ্ছে, বাংলা ভাষায় কথা বললেই রিপোর্ট করতে হবে। ওরা জানে না, বাংলা ভাষাভাষীর সংখ্যা এশিয়ায় দ্বিতীয় ও বিশ্বে পঞ্চম!”

তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “১৯৭১ সালে যারা ভারতে এসেছিলেন, তারা এখন ভারতের নাগরিক। পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী অনেকেই দেশভাগের আগে বা ১৯৭১-এর আগে জন্মেছেন। তাদের বাংলা ভাষার টান থাকতে পারে, কিন্তু তারা বাংলাদেশি নন।”

মমতার এই বক্তব্যকে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি সরাসরি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন। বিশেষ করে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারতের ভূমিকা এবং পশ্চিমবঙ্গে বাংলাভাষীদের অধিকার নিয়ে তাঁর এই অবস্থান আগামী দিনের রাজনীতিকে প্রভাবিত করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ