
ছবি : সংগৃহীত
চলমান এইচএসসি পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে অনিয়মের অভিযোগে ৮ জন পরীক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা। বাংলা, ইংরেজি, গণিত, উচ্চতর গণিত ও ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের উত্তরপত্র মূল্যায়নে শিক্ষার্থীদের দিয়ে বৃত্ত পূরণ করানোর ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
শিক্ষা বোর্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দারের সই করা চিঠিতে বলা হয়েছে, “পরীক্ষকের দায়িত্বে থেকে খাতার গোপন অংশ মূল্যায়নের কাজ শিক্ষার্থী বা অন্য কাউকে দিয়ে করানো শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এতে বোর্ডের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।”
অভিযুক্ত পরীক্ষকদের আগামী ৫ কর্মদিবসের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা জমা দিতে বলা হয়েছে। ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যাদেরকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে তারা হলেন:
নরসিংদীর বারৈচা কলেজের মধুছন্দা লিপি (বাংলা ১ম পত্র) , সাভারের হাজী ইউনুছ আলী কলেজের মো. জাকির হোসাইন (বাংলা ২য় পত্র) ,গাজীপুরের ভাষা শহীদ আব্দুল জব্বার আনসার ভিডিপি স্কুল অ্যান্ড কলেজের মো. রাকিবুল হাসান (বাংলা ২য় পত্র) ,ডেমরার রোকেয়া আহসান কলেজের মুরছানা আক্তার (ইংরেজি ২য় পত্র) ,নবাবগঞ্জের মুন্সীনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের আবু বকর সিদ্দিক (গণিত) , রাজবাড়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সমীরময় মন্ডল (গণিত) ,যাত্রাবাড়ী আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মো. সাখাওয়াত হোসাইন আকন (ইসলাম শিক্ষা) , সেন্ট যোসেফস হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের মহসীন আলামীন (উচ্চতর গণিত) ।
শিক্ষা বোর্ডের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, “পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন একটি গোপনীয় প্রক্রিয়া। এতে কোনো ধরনের গাফিলতি বা অনিয়ম কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।” নোটিশের অনুলিপি সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এই অনিয়মের ঘটনাগুলো তদন্তে একটি কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হতে পারে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ও ছবির প্রেক্ষিতে শিক্ষা বোর্ডের সুনাম রক্ষায় কঠোর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
পরীক্ষার ন্যায্যতা রক্ষায় শিক্ষা বোর্ডের এই কঠোর পদক্ষেপ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে। তবে, এই ধরনের অনিয়ম রোধে দীর্ঘমেয়াদি নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ারও তাগিদ দেওয়া হচ্ছে।