
চট্টগ্রাম বিশব্বিদ্যালয়ের (চবি) ঐতিহ্যবাহী শাটল ট্রেনে এবার ধ্বনিত হলো বাংলার মরমী সাধক হাসন রাজার অমর গান। সংগীত বিভাগের প্রায় ১০/১৫ জন শিক্ষার্থী মিলে একটি অনাড়ম্বর কিন্তু আকর্ষণীয় গানের আসর বসিয়েছেন , যেখানে তারা হাসন রাজার কালজয়ী গান ” আমি কিছু নই রে আমি কিছু নই” পরিবেশন করেছেন। এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে তারা গ্রাম বাংলার লোকসংগীতের শিকড়কে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করেছেন।
চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেন শুধু একটি পরিবহন মাধ্যম নয়, এটি ক্যাম্পাস স্মৃতি ও সংস্কৃতিরও বাহক। এবার সেই ট্রেনই পরিণত হলো একটি ভ্রাম্যমাণ সাংস্কৃতিক মঞ্চে। শিক্ষার্থীরা ট্রেনের ভেতরেই সাজিয়েছিলেন এক মন্ত্রমুগ্ধ পরিবেশ- গিটার, ঢোল, একতারা, তবলা, হারমনিয়াম , খঞ্জনার মতো বাদ্যযন্ত্রের মেলোডিতে হাসন রাজার গান যেন প্রাণ পেয়ে উঠেছিল।
শিক্ষার্থীরা তাদের পোশাক দিয়েও বাংলার সংস্কৃতিকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। মেয়েরা পড়েছিলেন বাহারি রঙের শাড়ি, ছেলেরা পাঞ্জাবী পায়জামা , মাথায় গামছায় সজ্জিত হয়ে ফুটিয়ে তুলেছিলেন গ্রাম বাংলার শিল্পীসুলভ আবহ। তাদের এই আয়োজন শাটল ট্রেনের যাত্রীদের মুহূর্তেই টেনে নিয়েছিল এক ভিন্ন জগতে- যেখানে গানের মাধ্যমে ফুটে উঠেছিল আধ্যাত্মিকতা ও সহজিয়া দর্শন।
হাসন রাজার ” আমি কিছু নই” গানটি বাউল দর্শনের গভীরতা প্রকাশ করে , যেখানে আত্নসমর্পণ ও ঈশ্বরপ্রেমের কথা বলা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা তাদের কন্ঠের সমন্বয়ে গানটিকে এমন ভাবে উপস্থাপন করেছেন যে, ট্রেনের যাত্রীরা মুগ্ধ হয়ে শুনেছেন , তালি দিয়ে অনেকেই অংশ নিয়েছেন এবং এই মুহূর্তের সাক্ষী হিসাবে ফোনে ভিডিও ধারণ করেছেন। এই আয়োজন শুধু একটি গানের অনুষ্ঠান নয়, বরং বাংলার লোকঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখার এক অনন্য প্রচেষ্টা।
শিক্ষার্থীদের মূল উদ্দেশ্য ছিলো, বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী শাটল ট্রেনকে আরও স্মরণীয় করতে, এবং হাসন রাজার গান যে শুধু শোনার নয় বরং অনুভবের , তা যেনো এই নতুন প্রজন্ম জানে এবং বোঝে।