পাক-ভারত যুদ্ধের ডায়েরি – দিন ১: ভারতের হামলায় নিহত ৮, আকাশপথে পাল্টাপাল্টি সংঘাতের দাবি – বিশ্লেষণে সাবেক বাংলাদেশী সেনা কর্মকর্তা ডিল এইচ খান।

বিডি কভারেজ

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার জেরে আজ (৭ মে, ২০২৫) ভোরে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে কথিত সন্ত্রাসী ঘাঁটিগুলোতে প্রথম আক্রমণ চালিয়েছে ভারত।

এই হামলা, যার বিশ্লেষণ করেছেন সাবেক বাংলাদেশী সেনা কর্মকর্তা ডিল এইচ খান, পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশ এবং পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরকে লক্ষ্যবস্তু করেছে।
পাকিস্তান দাবি করেছে, ভারতীয় বিমান বাহিনী তাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে মিসাইল হামলা চালিয়েছে। ইসলামাবাদ আরও দাবি করেছে যে তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান (তিনটি রাফাল, একটি মিগ-২৯ এবং একটি এসইউ-৩০) এবং একটি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। তবে, ভারত এখনো পর্যন্ত কোনো ক্ষয়ক্ষতির কথা স্বীকার করেনি এবং পাকিস্তানের এই দাবিগুলো নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
পাকিস্তানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভারতীয় হামলায় আটজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে; এছাড়া ৩৫ জন আহত হয়েছেন। পাকিস্তানের অভিযোগ, মসজিদসহ বেসামরিক এলাকাগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। হামলার পর উভয় দেশই নিজ নিজ আকাশসীমার কিছু অংশ বন্ধ করে দিয়েছে এবং নিয়ন্ত্রণ রেখা (LoC) বরাবর সংঘর্ষের তীব্রতা বেড়েছে।
ভারত এই হামলার কারণ হিসেবে গত ২২ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে ভারত-শাসিত কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন পর্যটকের মৃত্যুর ঘটনাকে উল্লেখ করেছে। নয়াদিল্লি এই হামলার জন্য পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গিদের দায়ী করেছে, যদিও পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ভারতের দাবি, তাদের এই হামলা ছিল “নির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক ও উত্তেজনা না বাড়ানোর মতো” এবং শুধুমাত্র সন্ত্রাসী অবকাঠামো ধ্বংসের উদ্দেশ্যে পরিচালিত হয়েছে। অন্যদিকে, পাকিস্তান এই আক্রমণকে “উস্কানিমূলক আগ্রাসন” আখ্যা দিয়েছে এবং বেসামরিক এলাকায় ইচ্ছাকৃতভাবে আঘাত হানার অভিযোগ তুলেছে। তারা আত্মরক্ষার্থে ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করারও দাবি করেছে।
এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশ উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে, কারণ এই দুটি পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে বৃহত্তর সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
সাবেক বাংলাদেশী সেনা কর্মকর্তা ডিল এইচ খানের বিশ্লেষণে, পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে এবং উভয় দেশই পাল্টাপাল্টি হামলা বা সাইবার আক্রমণের মাধ্যমে উত্তেজনা বৃদ্ধি করতে পারে। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা সংকট নিরসনে সহায়ক হতে পারে, তবে উভয় দেশের অভ্যন্তরীণ জনমতের চাপ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। বিশ্ববাসী এখন এই অঞ্চলের দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখছে। কাশ্মীর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব আবারও একটি বিপজ্জনক মোড় নিয়েছে, যার পরিণতি পারমাণবিক যুদ্ধের ঝুঁকি এবং ব্যাপক বেসামরিক প্রাণহানির কারণ হতে পারে।

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ