
আমরাও তো শিক্ষার্থী”— সমাবর্তনের স্বপ্নে চোখ রাখে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণরাজাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পড়ালেখা শেষ করেও হাজারো শিক্ষার্থী এখনও পর্যন্ত কখনোই নিজের সমাবর্তনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পায়নি। এ এক চাপা বেদনা, যা তাদের হৃদয়ের গহীনে দীর্ঘদিন ধরে জমে আছে। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যখন গাউন পরে, মাথায় টুপি দিয়ে ডিগ্রি গ্রহণ করে আনন্দে মেতে ওঠে, তখন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শুধুই তাকিয়ে থাকে—আক্ষেপ আর অসম্পূর্ণতার দহন বুকে নিয়ে।শিক্ষার্থীরা বলছেন, “আমাদেরও তো স্বপ্ন ছিল একদিন পরিবারের সামনে গাউন পরে, মাথায় টুপি দিয়ে সনদ নেওয়ার। সেটাও কি আমাদের প্রাপ্য নয়?”জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি, যেখানে প্রতিবছর লক্ষাধিক শিক্ষার্থী স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে। অথচ মাত্র একবার, ২০১৭ সালে সীমিত পরিসরে একটি সমাবর্তনের আয়োজন হয়েছিল। তাতে অংশগ্রহণ করতে পেরেছিলেন মাত্র কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী। এরপর থেকেই সমাবর্তনের কার্যক্রম যেন হারিয়ে গেছে সরকারি ফাইলের স্তূপে।শিক্ষার্থীদের মতে, এই আয়োজন কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং তাদের কঠোর পরিশ্রমের স্বীকৃতি, আত্মপরিচয়ের এক অবিস্মরণীয় মুহূর্ত।একজন শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা শুধু গরিব বা প্রত্যন্ত এলাকার বলে কি আমাদের স্বপ্ন থাকতেও নেই? জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেমেয়েরাও তো এই দেশেরই সন্তান।”তাদের দাবি একটাই—প্রতি বছর নিয়মিতভাবে সমাবর্তনের আয়োজন হোক, যাতে তারাও অনুভব করতে পারেন শিক্ষাজীবনের এক গর্বিত সমাপ্তি।আজকের দিনে শিক্ষা মানেই শুধু পাস করা নয়, বরং প্রাপ্য স্বীকৃতি পাওয়াও। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আজ সেই স্বীকৃতি থেকে বঞ্চিত। তাই তাদের একটাই আবেদন – সমাবর্তন কেবল একটি অনুষ্ঠান নয়—এটি একজন শিক্ষার্থীর আত্মমর্যাদার, শ্রমের এবং স্বপ্ন পূরণের প্রতীক। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের লাখো শিক্ষার্থী আজ সেই স্বপ্ন পূরণের আশায় মুখিয়ে আছে। এটি তাদের অধিকার, করুণা নয়। কর্তৃপক্ষের উচিত, অবহেলা না করে এবার তাদের সেই অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া।