
ফরিদপুর, ১৬ মে ২০২৫:
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় বজ্রপাতে এক স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। তবে, দাফনের প্রস্তুতির সময় মৃতদেহে অস্বাভাবিক নড়াচড়া দেখা দেওয়ায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
নিহতের নাম ইমন মোল্লা (১৪), যিনি ভাঙ্গা উপজেলার দেওড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বিকেলে প্রচণ্ড বৃষ্টি ও বজ্রপাতের সময় তিনি তার বাবাকে ডাকতে মাঠে যান। সেখানে হঠাৎ তার ওপর বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই গুরুতর আহত হন। তাকে দ্রুত ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মরদেহ বাড়িতে আনার পর গোসল দেওয়া ও কবর খোঁড়ার প্রস্তুতি চলছিল। এমন সময় হঠাৎ ইমনের দেহে নড়াচড়া দেখা যায়, যা দেখে উপস্থিত স্বজনরা ভেবে বসেন তিনি জীবিত হয়ে উঠেছেন। এতে আতঙ্কিত হয়ে পরিবার তাকে দ্রুত ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে, সেখানকার চিকিৎসকরাও নিশ্চিত করেন যে ইমন মারা গেছেন।
এ ঘটনা দ্রুত এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে এবং উৎসুক জনতার ভিড় জমে ইমনের বাড়িতে। অনেকেই এই অস্বাভাবিক ঘটনাকে অলৌকিক বলে মনে করলেও চিকিৎসকরা এটিকে স্বাভাবিক শারীরিক প্রতিক্রিয়া বলেই ব্যাখ্যা করেছেন।
ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. তানসিভ জুবায়ের বলেন, *”ইমনকে যখন হাসপাতালে আনা হয়, তখনই আমরা তাকে মৃত ঘোষণা করি। পরে শুনলাম যে দাফনের সময় তার দেহে নড়াচড়া দেখা গেছে। এটি আসলে মৃতদেহের পেশীর স্বাভাবিক সংকোচন হতে পারে, যা অনেক সময় ঘটে থাকে। তবে, এ ধরনের ঘটনায় বিভ্রান্তি তৈরি হলে তা অবশ্যই চিকিৎসা বিজ্ঞানের আলোকে ব্যাখ্যা করা উচিত।”*
বাংলাদেশে বর্ষাকালে বজ্রপাতে প্রাণহানির ঘটনা বেড়ে যায়। বিশেষজ্ঞরা উঁচু গাছ, খোলা মাঠ ও ধাতব বস্তু থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।
ইমনের মৃত্যুতে পরিবার ও স্কুলসহ এলাকাবাসী গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তার দাফন শেষে শোকস্তব্ধ পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন ও সাধারণ মানুষ।