পর্তুগালের কিংবদন্তি ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, যিনি ৪১ বছর বয়সেও মাঠের সবুজ ঘাসে তার শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ দিয়ে চলেছেন, এবার আর্থিক সাফল্যের ক্ষেত্রেও নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছেন। ফোর্বসের সাম্প্রতিক তালিকা অনুযায়ী, এই মহাতারকা টানা তৃতীয়বারের মতো বিশ্বের সবচেয়ে বেশি আয় করা ক্রীড়াবিদের মুকুট নিজের দখলে রেখেছেন।

পাঁচটি ব্যালন ডি'অর জয়ী এই ফুটবল জাদুকরের বার্ষিক আয় আকাশছোঁয়া, প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ তাকে দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাস্কেটবল তারকা স্টেফেন কারির চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি এগিয়ে রেখেছে। কারির আয় যেখানে ১৫৬ মিলিয়ন ডলার, সেখানে রোনালদো ২৭৫ মিলিয়ন ডলার আয় করে নিজের সিংহাসন আরও মজবুত করেছেন। তবে, দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী লিওনেল মেসি এই তালিকায় তৃতীয় স্থান থেকে নেমে পঞ্চম স্থানে অবস্থান করছেন, যা ফুটবলপ্রেমীদের জন্য কিছুটা অপ্রত্যাশিত।

শুধু বর্তমান সময়ের ক্রীড়াবিদদের মধ্যেই নয়, রোনালদো তার অসাধারণ আয়ের মাধ্যমে সর্বকালের সেরা ধনী ক্রীড়াবিদদের কাতারেও নিজের নাম লিখিয়েছেন। তিনি প্রাক্তন বিশ্ব বক্সিং চ্যাম্পিয়ন ফ্লয়েড মেওয়েদারকেও মোট আয়ের হিসেবে ছাড়িয়ে গেছেন। রোনালদোর এই আকাশছোঁয়া আয়ের মূল ভিত্তি হলো সৌদি প্রো লিগে আল নাসরের সাথে তার লাভজনক চুক্তি।

পাশাপাশি, বিভিন্ন স্পন্সরশিপ, বাণিজ্যিক উদ্যোগ এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিশাল ফ্যানবেস থেকেও তিনি নিয়মিত মোটা অঙ্কের অর্থ উপার্জন করে চলেছেন। গত বছরের তুলনায় তার আয় প্রায় ১৮২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা তার আর্থিক সাম্রাজ্যের ক্রমবর্ধমান বিস্তারকেই ইঙ্গিত করে।

অন্যদিকে, বাস্কেটবল তারকা স্টেফেন কারি, যিনি সম্প্রতি এনবিএ ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ৪,০০০ ক্যারিয়ার থ্রি-পয়েন্টের মাইলফলক অর্জন করেছেন, ১৫৬ মিলিয়ন ডলার আয় করে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছেন। ব্রিটিশ বক্সিংয়ের হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন টাইসন ফিউরি ১৪৬ মিলিয়ন ডলার আয় করে তৃতীয় স্থানে নিজের জায়গা ধরে রেখেছেন, যদিও তিনি ডিসেম্বরে ওলেক্সান্ডার উসিকের কাছে শিরোপা হারিয়েছেন।

আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক লিওনেল মেসি ১৩৫ মিলিয়ন ডলার আয় করে তালিকার পাঁচ নম্বরে নেমে গেলেও, তার বাণিজ্যিক মূল্য এখনো আকাশছোঁয়া। তালিকার দশম স্থানে থাকা ফরাসি তারকা কারিম বেনজেমা, যিনি রোনালদোর প্রাক্তন রিয়াল মাদ্রিদ সতীর্থ এবং বর্তমানে সৌদি প্রো লিগে আল ইত্তিহাদের হয়ে খেলছেন, ১০৪ মিলিয়ন ডলার আয় করেছেন।

এই তালিকা আবারও প্রমাণ করে, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো শুধু মাঠের পারফরম্যান্সেই কিংবদন্তী নন, বরং অর্থের জগতেও তিনি একচ্ছত্র সম্রাট। তার ব্র্যান্ড ভ্যালু এবং বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা তাকে অন্যান্য ক্রীড়াবিদদের থেকে বহু যোজন এগিয়ে রেখেছে।