জনপ্রিয় ইউটিউবার ও সামাজিক মাধ্যম ব্যক্তিত্ব ইলিয়াস হোসেন নারী অধিকার আন্দোলন নিয়ে সম্প্রতি একটি ভিডিও পোস্ট করে ব্যাপক আলোচনা ও বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। তার মন্তব্যে নারীদের সম-অধিকার আন্দোলনের পদ্ধতি ও ইসলামিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে নিজস্ব ব্যাখ্যা দেওয়ায় একদিকে যেমন সমর্থন মিলছে, অন্যদিকে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
ইলিয়াস হোসেন তার ভিডিওতে দাবি করেন, ইসলামিক শরিয়াহ মোতাবেক তিনি ও তার বোন পৈতৃক সম্পত্তিতে সমান অধিকার পেয়েছেন। তিনি তার বোনের পর্দানশীন জীবনযাপন ও পেশাগত সাফল্যের উদাহরণ টেনে বলেন, "ইসলাম নারীদের যথাযথ মর্যাদা দিয়েছে, বাড়াবাড়ির প্রয়োজন নেই।" তবে, তিনি স্বীকার করেন যে তার দাদা-দাদি ও নানা-নানির সম্পত্তি থেকে তিনি বঞ্চিত হয়েছেন, যা তিনি "সমাজের রীতিনীতি" বলে উল্লেখ করেন।
তবে তার বক্তব্যের সবচেয়ে বিতর্কিত অংশ হলো, তিনি দৌলতদিয়ায় নারী অধিকার সমাবেশে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি মন্তব্য করেন, "বাংলাদেশের সাধারণ নারীরা 'অশ্লীল' পথে হাঁটতে চায় না।" এছাড়া, তিনি নারী অধিকার কর্মীদের শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালানোর পরামর্শ দেন এবং ইসলামে নারীদের প্রাপ্য অধিকারের কথা তুলে ধরেন।
তার ভিডিওর শেষাংশে তিনি প্রথম আলো পত্রিকাকে লক্ষ্য করে বলেন, "কিছু গণমাধ্যম দেশে অস্থিরতা তৈরি করতে চায়," এবং দর্শকদের সতর্ক থাকতে বলেন। তার মতে, "বিশ্বকে দেখাতে হবে বাংলাদেশের নারীরা রাস্তায় নেমে ন্যায্য দাবি তুলে ধরতে পারে।"
ইলিয়াসের এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। একাংশ তাকে ইসলামিক মূল্যবোধের পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য সাধুবাদ জানালেও, অন্যদিকে নারী অধিকারকর্মী ও প্রগতিশীল ব্যবহারকারীরা তার ভাষাকে অপমানজনক ও সংকীর্ণমনা বলে আখ্যায়িত করেছেন। বিশেষ করে, নারী আন্দোলনকে তিনি যে প্রেক্ষাপটে উপস্থাপন করেছেন, তা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে।
মন্তব্যটি ইউটিউব ও ফেসবুক ছাড়িয়ে গণমাধ্যমেও আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, ইলিয়াস হোসেনের মতো প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বদের বক্তব্য সমাজে নারী অধিকারের সংগ্রামকে কিভাবে প্রভাবিত করে, তা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হওয়া উচিত।
উল্লেখ্য, ইলিয়াস হোসেন পূর্বেও বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক ইস্যুতে বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য আলোচনায় আসেন। এবারও তার বক্তব্য সমাজের বিভিন্ন স্তরে নতুন বিতর্কের সূত্রপাত করেছে।