ঢাকা মহিলা পলিটেকনিকে ছাত্রীদের বিক্ষোভ, হ্যারাজ করলেন অধ্যক্ষ মহোদয় পদত্যাগ চায় শিক্ষার্থীরা

নিজেস্ব প্রতিবেদক

নন-টেকনিক্যাল (নন-টেক) ব্যাকগ্রাউন্ডের অধ্যক্ষের পদত্যাগ ও টেকনিক্যাল প্রিন্সিপাল নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন ঢাকা মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।

 

গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ মে) দুপুর থেকে ইনস্টিটিউটে জড়ো হতে শুরু করেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পরে ক্যাম্পাসের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা।

বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, একজন নন-টেক প্রিন্সিপাল টেকনিক্যাল শিক্ষার মৌলিক চাহিদা, পাঠদান প্রক্রিয়া ও বিভাগের কার্যক্রম সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান রাখেন না। ফলে সিদ্ধান্ত গ্রহণে দুর্বলতা, প্রশাসনিক জটিলতা এবং শিক্ষার মান অবনতি ঘটছে।

 

এর আগে, গত রোববার (১৮ মে) রাজধানীর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা ‘ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের’ নিয়ে করা রিট বাতিলের দাবিতে হাইকোর্টের সামনে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।

প্রসঙ্গত, ৬ দফা পূরণে দীর্ঘদিন থেকে দাবি জানিয়ে আসা পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা গত ১৬ এপ্রিল থেকে রাস্তায় আন্দোলনে নামেন।

সপ্তাহখানেক এই কর্মসূচি চালানোর পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের দাবি বাস্তবায়নের রূপরেখা প্রণয়নে কমিটি গঠন করে। তবে বেঁকে বসে তাদের প্রিন্সিপাল।

ইলেক্ট্রিক্যাল বিভাগের প্রথম সেমিস্টারের এক শিক্ষার্থী জানায়, সারাদিন এই গরম রোদ সহ্য করে কিছু না খেয়ে টানা স্লোগান দিয়ে যাওয়া শিক্ষার্থীরা আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই করছি।
কারণ আমরা “ঢাকা মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট” এর শিক্ষার্থীরা আমাদের প্রিন্সিপাল কে মানি না। আমরা তাকে প্রিন্সিপাল হিসেবে চাই না। ”

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানায়,”তিনি আমাদের ৬দফা কে অযৌক্তিক বলে দাবি করে। তিনি আমাদের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে হাসি ঠাট্টা করে। তার সামনে আমাদের নিয়ে হাসি ঠাট্টা করা হয়েছে। আমাদের মেয়েদের বলা হয়েছে আমরা নাকি জামাই খুজতে ডিপ্লোমা করতে এসেছি। একটা সার্টিফিকেট পেলে জামাই নিয়ে সংসার করব। এগুলোতে তিনি কোনো বিরোধিতা করেননি। আমরা এমন অসম্মান মানি না। উনি শুধু আমাদের ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের এ নয় বরং সকল নারীকেই অপমান করেছেন। ”

 

৭ম সেমিস্টারের আর্কিটেকচার বিভাগের এক শিক্ষার্থী জানায়, ঢাকা মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের বোনেরা যে পরিস্থিতির শিকার হয়েছে আগামীতে দেশের অন্য কোনো মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা যেন এমন হাসি ঠাট্টা বা অপমানের স্বীকার না হয় তার নিশ্চয়তা চেয়ে এই দাবি জানায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

 

তারা আরও জানায়, শিক্ষক সব সময় আমাদের বাবা মায়ের মতো আমরা যথেষ্ট সম্মান করি কিন্তু তাঁরা এই রকম পরিস্থিতি কেন তৈরি করবে ।আজকে ঢাকা মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা হেনস্থার শিকার হয়েছে লাঞ্ছিত হয়েছে! একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ কেনো এমন হবে! আর কত রক্ত ঝরবে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের, আর কত লাঞ্ছনার শিকার হবে, আর কতভাবে নারী শিক্ষার্থীদের হেনস্থা হতে হবে বলে, ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।

 

আন্দোলনরত সকল শিক্ষার্থীর প্রাণের দাবি, কর্তৃপক্ষ যেনো পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের একটা সুস্থ পরিবেশে ফিরিয়ে আনে। একদিকে যেমন তাঁরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হচ্ছে তেমনি ভাবে কারিগরি শিক্ষা হুমকির মুখে পড়েছে। এতে দেশের উন্নয়নের বাঁধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।তারা মাননীয় শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে অনুরোধ জানায় তাড়াতাড়ি যেনো এই সমস্যার সমাধান হয়।

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ