ছবি : সংগ্রহীত
সরকার কর্তৃক প্রকাশিত 'বাংলাদেশ গেজেট'-এর অতিরিক্ত সংখ্যা অনুযায়ী, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ (২০১৮ সনের ৫২ নং আইন)-এ নতুন সংশোধনী আনা হয়েছে। এই সংশোধনী সরকারি কর্মচারীদের আচরণ ও দণ্ড সংক্রান্ত বিশেষ বিধান নিয়ে এসেছে, যা অসদাচরণ এবং কর্তব্য অবহেলার ক্ষেত্রে কঠোর শাস্তির বিধান করেছে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ থেকে এই অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে।
নতুন অধ্যাদেশ 'সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪' নামে অভিহিত হবে এবং এটি অবিলম্বে কার্যকর হবে। সংশোধনী অনুযায়ী, সরকারি কর্মচারীদের আচরণ ও দণ্ড বিষয়ক ধারা ৮ এবং ৯-এ নতুন বিধান যুক্ত করা হয়েছে।
ধারা ৮: সরকারি কর্মচারীদের আচরণ ও দণ্ড বিষয়ক বিশেষ বিধান
এই ধারায় বলা হয়েছে, কোনো সরকারি কর্মচারী যদি নিম্নলিখিত অসদাচরণ করেন, তবে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে:
* অসুন আনুগত্য (insubordination): এমন কোনো কাজ করা, যা অসুন আনুগত্যের (insubordination) শামিল।
* কর্তব্যে অবহেলা বা গাফিলতি: যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যতীত নিজ কর্ম হতে অনুপস্থিত থাকা বা বিরতি গ্রহণ করা বা কর্তব্য সম্পাদনে ব্যর্থ হওয়া।
* কর্ম পালনে ইচ্ছাকৃত ব্যর্থতা: অন্য কোনো কর্মচারীকে তার কর্ম হতে অনুমতি প্রাপ্তি বা বিরতি ছাড়াই তাকে তার কর্তব্য পালনে সহায়তা না করা বা নিয়মিত উপস্কা’ন দিতে উৎসাহিত না করা।
* কর্তব্যে বাধা: কোনো সরকারি কর্মচারীকে তার উপযুক্ত হতে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধা দেওয়া।
উল্লিখিত বিষয়গুলো অসদাচরণ হিসেবে বিবেচিত হবে এবং এই ধারার উপ-ধারা (২) এ বর্ণিত যেকোনো দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
ধারা ৯: দণ্ডের প্রকারভেদ
ধারা ৯ অনুযায়ী, সরকারি কর্মচারীদের অসদাচরণের জন্য নিম্নলিখিত দণ্ডসমূহ আরোপ করা যাবে:
* নিয়োগ বা নিয়ম থেকে পদাবনতি;
* চাকরি হতে অপসারণ; এবং
* চাকরি হতে বরখাস্ত।
এছাড়াও, ধারা ৯-এর উপ-ধারা (৩) এ বর্ণিত অপরাধের জন্য কার্যধারা গ্রহণ করা হবে। সেইক্ষেত্রে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ অথবা এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি, অভিযোগ গ্রহণ এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মচারীর অসদাচরণ ও তার অভিযুক্ত বলিয়া বিবেচিত হবে। এই ধারার ধারা ৭ কার্যবিধির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে নোটিশ প্রদান করা হবে এবং তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের উপর ভিত্তি করে উপযুক্ত শুনানির সুযোগ দেওয়া হবে।
পটভূমি
এই সংশোধনী এমন সময়ে এলো যখন সরকারি কর্মচারীদের কর্মস্থলে শৃঙ্খলা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। সরকারের এই পদক্ষেপ সরকারি প্রশাসনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি এবং জনসেবার মান উন্নয়নের লক্ষ্যেই নেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।