ইরান ইস্যুতে উভয় সংকটে যুক্তরাষ্ট্র, ৩ আরব দেশের অনুরোধে বাড়ছে কূটনৈতিক চাপ

নিজেস্ব প্রতিবেদক

ছবি : সংগ্রহীত

ইরান ইস্যুতে উভয় সংকটে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একদিকে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল, অন্যদিকে সৌদি আরব, কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত-এর মতো প্রভাবশালী আরব রাষ্ট্রগুলো ইরানে হামলার তীব্র বিরোধিতা করছে।

 

সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফরে এই তিনটি দেশের নেতারা তাকে অনুরোধ করেছেন, ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে যুক্তরাষ্ট্র যেন কোনো হামলা না চালায়।

এই তিন আরব দেশ ইরানকে বাঁচানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে এই অনুরোধ করেনি। বরং যুক্তরাষ্ট্র হামলা চালালে ইরান পাল্টা সৌদি, কাতার এবং আমিরাতে হামলা চালাতে পারে— এই আশঙ্কা থেকেই তারা ট্রাম্পকে অনুরোধটি করেন। কারণ এই তিনটি দেশে মার্কিন সেনাদের ঘাঁটি আছে এবং ইরানের সামরিক বাহিনী ইতোমধ্যে মার্কিন সেনাদের হুমকি দিয়ে বলেছে, মধ্যপ্রাচ্যে ৫০ হাজার মার্কিন সেনা কাচের ঘরে বসে আছে এবং কাচের ঘরে বসে কারও দিকে পাথর ছোড়া ঠিক হবে না। শুধু তাই নয়, মধ্যপ্রাচ্যের যেসব দেশে মার্কিন সেনাদের ঘাঁটি আছে সেসব দেশকে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চিঠি দিয়ে স্পষ্ট করে বলে দিয়েছে, ইরানে হামলায় যেসব দেশ থেকে মার্কিন সেনারা প্রতিক্রিয়া দেখাবে সেসব দেশে পাল্টা হামলা চালাবে ইরান।

 

সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান, আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন জায়েদ এবং কাতারের আমির তামিম আল থানি ট্রাম্পের কাছে আশঙ্কা করেন, যদি ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামোতে কোনো ধরনের হামলা হয়, তাহলে ইরান পাল্টা সৌদি, আমিরাত এবং কাতারে হামলা চালাতে পারে। দেশগুলোতে মার্কিন ঘাঁটি থাকায় তারা এই আশঙ্কা করেন।

 

দুই দশকেরও বেশি সময় পর সম্প্রতি ইরান সফরে গিয়েছিলেন সৌদি রাজপরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্য এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রিন্স খালিদ বিন সালমান। তার এই সফর ছিল মধ্যপ্রাচ্যে সম্ভাব্য সংঘাত এড়াতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক উদ্যোগের অংশ। তিনি ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনিকে সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজের একটি গোপন বার্তা পৌঁছে দেন। ওই বার্তায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু চুক্তির আলোচনায় গুরুত্ব দিয়ে অংশ নিতে ইরানকে অনুরোধ জানানো হয়।

আরব দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানে হামলা চালাতে মানা করলেও ওয়াশিংটনের চেয়ে এখন ইসরায়েল ইরানে হামলা চালানোর ব্যাপারে বেশি আগ্রহী। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে এ বিষয়ে কঠোরভাবে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। তিনি জানান, ইরানের সঙ্গে তাদের পারমাণবিক আলোচনা বেশ ভালোভাবে এগোচ্ছে। তবে ইরান হুমকি দিয়ে রেখেছে তেহরানের ওপর হামলা হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

সূত্র: কালবেলা ডেস্ক

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ