
ছবি: সংগ্রহীত
আজ (২ জুন) বিকেল ৩টায় অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বেতার ও টেলিভিশনের মাধ্যমে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করবেন। এই প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর পাশাপাশি ভোক্তার স্বার্থ রক্ষার বিষয়টি গুরুত্ব পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর ফলে কিছু পণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে, তবে বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় ও শিল্প উপকরণের দাম কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রস্তাবিত বাজেটে এলএনজি আমদানিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার হতে যাচ্ছে। বর্তমানে এলএনজি আমদানির সময় ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ২ শতাংশ অগ্রিম কর দিতে হয়, যা প্রত্যাহারে গ্রাহক পর্যায়ে এর দাম কমতে পারে।
জ্বালানি তেলের ক্ষেত্রে, ক্রুড ফুয়েল অয়েল বা অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের ওপর শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করা হতে পারে এবং অন্যান্য জ্বালানি আমদানিতে শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে ৩ শতাংশ কমানো হতে পারে। এর ফলে জ্বালানি তেলের দাম কিছুটা কমতে পারে।
চামড়া শিল্পে ব্যবহৃত কিছু রাসায়নিক উপাদানে শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে ১ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে, যা ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণে সহায়ক হবে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানিতে উৎসে কর বা সোর্স ট্যাক্স কমানোর সিদ্ধান্ত আসতে পারে। বর্তমানে ১ শতাংশ উৎসে কর রয়েছে, যা কমিয়ে অর্ধেক করা হবে। এর ফলে ধান, গম, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, ছোলা, ডাল, চিনি, ভোজ্যতেলসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমতে পারে।
ভূমি নিবন্ধনের ক্ষেত্রে অগ্রিম কর কিছুটা কমানো হতে পারে এবং কাঠার পরিবর্তে শতাংশে নিবন্ধন ফি ও কর নির্ধারণ করা হবে। পরিশোধিত চিনির আমদানি শুল্ক প্রতি টন ৪ হাজার ৫০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৪ হাজার টাকা করার প্রস্তাব রাখা হচ্ছে, যা চিনির বাজার দর সহনীয় ও স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করবে।
সয়াবিন মিল এবং কাগজ শিল্পের আমদানিকৃত কাঁচামাল বা উপকরণের ওপর শুল্ক হ্রাসের প্রস্তাব থাকছে। এছাড়াও, নির্মাণ শিল্পের উপকরণ যেমন ফেনোলিক রেজিন ও স্যান্ডপেপার জাতীয় কাঁচামালের ওপর শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব রয়েছে।
সংবাদপত্রের শিল্পে ব্যবহৃত নিউজপ্রিন্ট আমদানির কাস্টমস শুল্ক ৫ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করার প্রস্তাব বিবেচনায় রয়েছে, যা দেশীয় গণমাধ্যমকে সহায়তা করবে। ক্রিকেট ব্যাট তৈরির কাঠ আমদানির ওপর শুল্ক ৩৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৬ শতাংশ করা হতে পারে, যা দেশে ক্রিকেট ব্যাট সাশ্রয়ী করবে।
দেশীয় সফটওয়্যার উন্নয়নে বিদেশি অপারেটিং সিস্টেম, ডেটাবেজ, ডেভেলপমেন্ট টুলস, সিকিউরিটি সফটওয়্যারে আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হতে পারে। মাটির ও পাতার তৈরি তৈজসপত্রের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারের প্রস্তাব রয়েছে।
বিদেশি জুসের ক্ষেত্রে নন-অ্যালকোহলিক জুস আমদানির ওপর সম্পূরক শুল্ক ১৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০০ শতাংশ করার প্রস্তাব থাকতে পারে, ফলে তুলনামূলক কম দামে বিদেশি জুস মিলতে পারে। পিভিসি পাইপ এবং কপার ওয়্যারের উপকরণ আমদানিতে শুল্ক যথাক্রমে ২৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ এবং ১৫ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশে কমানো হচ্ছে।
এছাড়া, পরিবহনের টায়ার, টিউব, ব্রেক সু, ব্রেক প্যাড, মার্বেল ও গ্রানাইটের কাঁচামাল এবং যন্ত্রপাতি আমদানির ওপর শুল্ক কমার প্রস্তাব থাকছে, যার ইতিবাচক প্রভাব ভোক্তার পর্যায়ে দামে পড়তে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।