
ছবি : সংগ্রহীত
সমর্থকরাই খেলার প্রাণ। গত এক যুগে বাংলাদেশের ফুটবল অনেকটাই জীর্ণশীর্ণ পরিস্থিতিতে থাকলেও, ফুটবলপ্রেমী দর্শকরা মাঠে গিয়ে বাংলাদেশ দলকে উজ্জীবিত করেছেন। গ্যালারীতে ব্যানার নিয়ে স্লোগান দেওয়াসহ অনেক কিছুই করেছেন। তবে দুঃসময়ে পাশে থাকা প্রকৃত ফুটবল সমর্থকদের বড় একটি অংশ এবার সিঙ্গাপুর ম্যাচে গ্যালারীতে থাকা নিয়ে ঘোর অনিশ্চয়তায় পড়েছে।
‘ফুটবল আলট্রাস’ নামে বাংলাদেশের ফুটবল সমর্থকদের একটি অন্যতম গোষ্ঠী, যারা টিকিটের দাবিতে আজ বিকেল থেকে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাফুফে ভবনের সামনে অবস্থান করছে। তাদের হাতে প্ল্যাকার্ডে লেখা রয়েছে: ‘টিকিট অথবা টিকিট’, ‘আমি এবার চুপ হলাম টিকিট দে’, ‘নো আলট্রাস, নো ফুটবল’।
আলট্রাস অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত এই অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। বাফুফে ভবনের প্রধান ফটকের সামনেই বসেছেন আলট্রাসের জন বিশেক সদস্য। বাফুফে সমর্থকদের অবস্থানে কোনো বাধা প্রদান কিংবা অন্য কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। ফেডারেশনের কর্তারা পেছনের গেট দিয়ে প্রবেশ করে তাদের দাপ্তরিক কাজ সম্পন্ন করছেন।
বিগত অর্ধযুগের বেশি সময় ধরে ‘ফুটবল আলট্রাস’ বাংলাদেশ ফুটবল দল ও দেশের ফুটবলের নানা কার্যক্রমে সমর্থন জুগিয়ে আসছে। সেই আলট্রাস বাফুফের কাছে প্রায় মাস দুয়েক আগে আর্থিক বিনিময় মূল্যের মাধ্যমে টিকিট কেনার জন্য আনুষ্ঠানিক চিঠি দিলেও কোনো উত্তর পায়নি। সাম্প্রতিক সময়ে আলট্রাসের দুই-তিন হাজার টিকিটের চাহিদার প্রেক্ষিতে ফেডারেশন প্রথমে মাত্র ১০০ টিকিট প্রদানে সম্মত হয়েছিল, যা আলট্রাস প্রত্যাহার করে নেয়।
বাফুফে প্রথমবারের মতো টিকিটিং পূর্ণাঙ্গভাবে অনলাইনে করেছে। তবে টিকিফাই প্ল্যাটফর্ম সাইবার আক্রমণের শিকার হয়েছিল। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও অনেক সমর্থক টিকিট কাটতে পারেননি।
এরপরেও নাকি বেশ অল্প সময়ের মধ্যে সকল টিকিট বিক্রি হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। সমর্থকরা বাফুফের টিকিটিং পার্টনার টিকিফাইকে নিয়ে নানা সমালোচনা করেছে। প্রবাসী ফুটবলারদের বাংলাদেশে আনার ক্ষেত্রে বাফুফে সহ-সভাপতি ফাহাদ করিমকে সমর্থকরা প্রশংসায় ভাসিয়েছিলেন। তবে টিকিটিং ও আরও কিছু ইস্যুতে সেই ফাহাদ করিম এখন সমর্থকদের সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। শুধু সমর্থক নয়, ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির কয়েকজন ফাহাদ করিমের উপর টিকিট সংক্রান্ত কিছু কর্মকান্ডের জন্য অত্যন্ত নাখোশ।
‘ফুটবল আলট্রাস’ ছাড়াও বাংলাদেশ ফুটবল সাপোর্টার্স ফোরাম এবং আরও কয়েকটি সমর্থক গ্রুপও টিকিটের জন্য হাহাকার করছে। এদের প্রায় সবাই ফুটবলের দুঃসময়ের সঙ্গী। হামজা-সামিত আসার পর ফুটবলে সুদিনের হাওয়া বইছে, তবে সেই সুদিনে বাফুফে পুরনো স্মৃতি ভোলার পথে বলে মনে হচ্ছে।