ছবি : সংগ্রহীত
ইরানের উন্নত প্রযুক্তির ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত। দেশটির তিন স্তরের বিখ্যাত আয়রন ডোম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও ইরানের সেজ্জিল মিসাইলের সামনে ব্যর্থ হয়েছে। ইরানের এই মিসাইল হামলায় ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনায় ধ্বংসযজ্ঞ চলছে।
ইরানের তৈরি সেজ্জিল মিসাইল একটি অত্যাধুনিক দ্বি-স্তরবিশিষ্ট ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, যা সলিড ফুয়েল প্রযুক্তিতে চালিত। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ১৮ মিটার এবং ওজন ২৩ টন। এটি ৭০০ কেজি বিস্ফোরক বহন করতে সক্ষম। এই মিসাইলের গতি ঘণ্টায় ৬,১৭৪ কিলোমিটার, যা সর্বোচ্চ ১০,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি করা যায়।
সেজ্জিলের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এটি দ্রুত উৎক্ষেপণযোগ্য এবং রাডার সিস্টেম ফাঁকি দিতে সক্ষম। এটি ২৫,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। ভূগর্ভস্থ বাংকার ধ্বংস করতেও এটি অত্যন্ত কার্যকর।
ইরান ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ১৫টিরও বেশি সেজ্জিল মিসাইল নিক্ষেপ করেছে, যার বেশিরভাগই রাজধানী তেল আবিব, হার্জেলিয়া, বাত ইয়াম ও হাইফায় আঘাত হেনেছে। এই হামলায় ইসরায়েলের বেশ কয়েকটি রাডার সিস্টেম সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে।
তেল আবিবে একটি আবাসিক ভবন ধসে ৯ জন নিহত হয়েছে। হার্জেলিয়া ও হাইফায় সামরিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মোট নিহতের সংখ্যা ৩০ ছাড়িয়েছে এবং আহত ২০০-এর বেশি। ১০টির বেশি ভবন সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে, ৫০টির বেশি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত।
সেজ্জিল মিসাইল ইরানের সামরিক শক্তি ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতার প্রতীক। এটি শুধু প্রতিরক্ষা নয়, আক্রমণাত্মক ক্ষমতারও পরিচয় দিয়েছে। ইরান ইতিমধ্যেই ব্যালিস্টিক মিসাইল ও ড্রোন প্রযুক্তিতে বিশ্বকে চমক দিয়েছে। এবার সেজ্জিলের সফল ব্যবহার দেখিয়ে দিয়েছে যে, তারা যেকোনো শক্তির বিরুদ্ধে পাল্টা জবাব দিতে সক্ষম।
এই সংঘাতে ইরান স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, তাদের সামরিক শক্তি কোনো অংশেই কম নয়। সেজ্জিলের মতো অত্যাধুনিক মিসাইল ইরানের প্রতিরোধ ও আক্রমণ উভয় কৌশলকেই আরও শক্তিশালী করেছে। বিশ্ব এখন দেখছে, ইরান কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে!