ছবি : সংগ্রহীত
রাজধানীর উত্তরা এলাকায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদাকে বিক্ষুব্ধ জনতা আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। এ সময় তার গলায় জুতার মালা পরানো হয়। রোববার (২২ জুন) সন্ধ্যায় উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টরে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় বাসিন্দারা নুরুল হুদাকে চিনতে পেরে তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। উত্তরা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) সচিন মল্লিক ঘটনাটি নিশ্চিত করে বলেন, "ঘটনাস্থলে যাচ্ছি, বিস্তারিত জানার পর তথ্য দেব।"
স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান জানান, স্থানীয় নেতাকর্মীরা নুরুল হুদাকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছেন।
এর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন (২০১৮) নিয়ে বিএনপি নুরুল হুদাসহ সাবেক তিন সিইসির বিরুদ্ধে মামলা করে। ওই মামলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বেশ কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে। তবে নুরুল হুদাকে এই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে কি না, তা এখনো নিশ্চিত করেনি পুলিশ।
কে এম নুরুল হুদা ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সিইসির দায়িত্ব পালন করেন। তার অধীনে অনুষ্ঠিত ২০১৮ সালের নির্বাচন 'রাতের ভোট' হিসেবে কুখ্যাতি পায়। ওই নির্বাচনে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো অংশ নিলেও ফলাফলে তাদের প্রার্থীরা প্রায় সব আসনে হেরে যায়। বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, এই নির্বাচন ছিল ধারাবাহিকভাবে তৃতীয় একটি 'ভুয়া' নির্বাচন।
আওয়ামী লীগ টানা ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকাকালে তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিরোধীদের দাবি, এসব নির্বাচনে কারচুপি ও ভোটার দমন-পীড়নের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়েছে। নুরুল হুদার সময়ে হওয়া ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়েই সাধারণ মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষোভ ছিল, যা আজকের এই ঘটনায় প্রকাশ পেয়েছে।
নুরুল হুদা বর্তমানে পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক কোনো অভিযোগ গঠন করা হয়েছে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
এই ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উত্তাপ তৈরি হয়েছে। সাধারণ মানুষের এই স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিক্রিয়া দেখে অনেকেই মনে করছেন, এটি বিতর্কিত নির্বাচন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে জনগণের দীর্ঘদিনের জমে থাকা ক্ষোভেরই প্রকাশ।