
ছবি : সংগ্রহীত
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মার্কো রুবিও ইরানকে হরমুজ প্রণালী বন্ধ না করার জন্য চীনের সহযোগিতা কামনা করেছেন। তিনি স্পষ্ট ভাষায় সতর্ক করে বলেন, *”ইরান যদি এই প্রণালী বন্ধ করে, তাহলে তা তাদের জন্য সবচেয়ে বড় ভুল হবে। এটি একপ্রকার অর্থনৈতিক আত্মহত্যার শামিল।”
রুবিও তার বক্তব্যে জোর দিয়ে বলেন, “আমরা এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত, কিন্তু অন্যান্য দেশকেও এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে। কারণ হরমুজ বন্ধ হলে অনেক দেশের অর্থনীতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।” তার এই মন্তব্য আসে ইরানের পার্লামেন্ট কর্তৃক হরমুজ প্রণালী বন্ধের প্রস্তাব অনুমোদনের খবরের পরিপ্রেক্ষিতে।
এই প্রণালী মধ্য প্রাচ্যের একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল জলপথ, যার মাধ্যমে বিশ্বের প্রায় ২০% তেল ও গ্যাস পরিবাহিত হয়। ইরান পূর্বেই এই প্রণালী বন্ধের হুমকি দিয়ে আসছে, যা বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই আহ্বান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, কারণ চীন ইরানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বজায় রেখেছে। রুবিও পরোক্ষভাবে ইঙ্গিত দেন যে, চীন ইরানকে এই সিদ্ধান্ত থেকে বিরত রাখতে প্রভাব খাটাতে পারে।
ইরানের প্রেস টিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশটির পার্লামেন্ট হরমুজ প্রণালী বন্ধের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। যদিও এই প্রস্তাব এখনও বাস্তবায়নের পর্যায়ে যায়নি, তবুও এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ইরান এই প্রণালী বন্ধ করলে বৈশ্বিক জ্বালানি সরবরাহে মারাত্মক সংকট দেখা দেবে, যা বিশ্ব অর্থনীতিকে নতুন করে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে।
এই সঙ্কট মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো বড় তেল আমদানিকারক দেশগুলোর কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়তে পারে। বিশেষ করে চীন, যারা ইরানের ওপর প্রভাব রাখতে পারে, তাদের ভূমিকা এই পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
হরমুজ প্রণালী নিয়ে ইরানের সম্ভাব্য সিদ্ধান্ত শুধু আঞ্চলিক নিরাপত্তাই নয়, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্যও একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের পাশাপাশি চীনের মতো দেশগুলোর ভূমিকা এই সঙ্কট নিরসনে কতটা কার্যকর হয়, তা এখন দেখার বিষয়।