কিশোরগঞ্জে ভয়াবহ ডাকাতি: অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ২২ লাখ টাকা লুট

নিজেস্ব প্রতিবেদক

ছবি : সংগ্রহীত

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলায় একটি ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (২৫ জুন) দিবাগত রাত ২টা ১৫ মিনিটে পাকুন্দিয়া পৌরসভার শ্রীরামদী এলাকার বিএডিসি কোল্ড স্টোর সংলগ্ন একটি বাড়িতে অস্ত্রের মুখে বাড়ির সবাইকে জিম্মি করে নগদ অর্থ, স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ২২ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাত দল। এ ঘটনায় বাড়ির মালিক ইছাম উদ্দিন (৭০) গুরুতর আহত হয়ে পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।

 

আহত ইছাম উদ্দিন একই গ্রামের মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে। জানা যায়, রাত সোয়া ২টার দিকে ১০-১২ জনের একটি সশস্ত্র দল দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বাড়িটিতে প্রবেশ করে। তারা প্রথমে প্রতিটি ইউনিটের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকে এবং ধারালো অস্ত্রের মুখে সবাইকে একটি কক্ষে জিম্মি করে ফেলে। এরপর তারা প্রতিটি ঘরে ঢুকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে। এ সময় ডাকাত দলের সদস্যরা আসবাবপত্র ভাঙচুর করে মেঝেতে ফেলে দেয়।

 

বাড়ির ভাড়াটিয়া ও বিকাশ ব্যবসায়ী রাসেল মিয়া জানান, তার ঘরে ৪-৫ জন ধারালো অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করে তাকে জিম্মি করে। এরপর তার কক্ষের আলমারি, র্যাকসহ সবকিছু ভাঙচুর করে এবং দোকানের বিকাশের ক্যাশ ব্যাগ থেকে নগদ ৩ লাখ ৫৪ হাজার টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। তিনি বলেন, “সর্বোচ্চ ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটে গেল। আমার অনেক কষ্টের জমানো টাকায় অন্য জায়গায় কেনা বাড়ির দলিলের কাগজপত্র ও নগদ টাকা সবকিছু নিয়ে আমাকে পথের ভিখারি বানিয়ে গেছে ডাকাতদল।”

 

আরেক ভাড়াটিয়া জানান, তার ঘরে ঢুকে দ্বিতীয় দরজা খোলার জন্য ভাঙচুর করা হয় এবং একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে তিনি দরজা খুলে দিলে তার স্ত্রীর স্বর্ণালংকার ও টাকা-পয়সা সবকিছু নিয়ে যায় ডাকাতরা। একই কথা জানান ১নং ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য আমির উদ্দিন। তিনি বলেন, “আমি যতদূর জানি এখানে তিনজন ভাড়াটিয়া। ডাকাত দলের সদস্যরা বাড়ির প্রধান গেট দিয়ে বের হয়ে মেইন রোডে উঠে ছোট্ট একটি কাভার্ড ভ্যানে করে পালিয়ে যায়।”

 

বাড়ির মালিক ইছাম উদ্দিন বলেন, “মঙ্গলবার রাত ২টা ১৫ মিনিটের দিকে আমার বাড়িতে অজ্ঞাত ১০-১২ জন লোক এসে অস্ত্র দিয়ে আমাদের জিম্মি করে ডাকাতি করে। বাড়িতে ঢুকে সব ভাড়াটিয়ার টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকারসহ সব আসবাবপত্র নিয়ে গেছে। এসময় দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আমার কাছ থেকে নগদ ৪ লাখ টাকা নিয়েছে।” তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় তার বাড়ির একজন ভাড়াটিয়াকে থানায় আটক করা হয়েছে। ইছাম উদ্দিনের অনুমান, তার বাড়িতে আনুমানিক ২০-২২ লাখ টাকার মতো ডাকাতি হয়েছে। তিনি এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সর্বোচ্চ সহায়তা চেয়েছেন।

 

বাড়ির মালিকের ছেলে জহিরুল ইসলাম, যিনি ব্যবসায়িক কাজে ঢাকায় অবস্থান করছেন, মোবাইল ফোনে বলেন, “আমি ব্যবসায়িক কাজে ঢাকায় আছি। দেশের আইনশৃঙ্খলা এতো অবনতি হয়েছে কল্পনাও করতে পারিনি। আমার বাবা অল্পের জন্য প্রাণ রক্ষা পেয়েছে। বাড়িতে থাকা সবকিছুই লুটপাট করেছে। আমি আসছি এসে আইনি যা যা পদক্ষেপ নেওয়া দরকার তা নেব।”

 

পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “এ ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসি তাৎক্ষণিক। এ বিষয়ে আমরা খোঁজ নিয়ে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছি। এছাড়া একজন আটক করা হয়েছে।”

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ