ছবি : সংগৃহীত
যেখানে বিশ্বজুড়ে দেশগুলো আধুনিক রকেট ও মিসাইল প্রযুক্তিতে প্রতিযোগিতায় নামছে, সেখানে বাংলাদেশের এক কিশোরের উদ্ভাবন আশা জাগাচ্ছে। মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার পীরতলা গ্রামের ৭ম শ্রেণির ছাত্র আল কাসাব তৈরি করেছে একটি বিশেষ রকেট সিস্টেম, যা শত্রু বিমান শনাক্ত করে তা ধ্বংস করতে সক্ষম বলে দাবি তার। এছাড়াও এই রকেটে লেজার কমিউনিকেশন সিস্টেম যুক্ত করে চাঁদের তথ্য সংগ্রহের কথাও বলেছে এই কিশোর বিজ্ঞানী।
কাসাবের রকেট তৈরির গল্প শুরু হয়েছিল মাত্র পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময়। নাসা, স্পেসএক্স এবং রাশিয়ার রকেট উৎক্ষেপণের ভিডিও ইউটিউবে দেখে তার মনে হয়েছিল—এটা যদি বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করা যায়! সেই স্বপ্ন থেকেই সে জড়ো করতে শুরু করে পরিত্যক্ত ইলেকট্রনিক সামগ্রী, যেমন—খেলনা, গাড়ির যন্ত্রাংশ, মাদারবোর্ড, সোলার সেন্সর, ক্যামেরা লেন্স এবং মিরর সিস্টেম। পাইথন সফটওয়্যার দিয়ে কম্পিউটারের মাধ্যমে এই রকেট নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
কাসাবের এই উদ্ভাবন ইতিমধ্যেই আলোড়ন তুলেছে। কুষ্টিয়া ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান মেলায় সে প্রথম স্থান অর্জন করেছে। এছাড়া গাংনী উপজেলা বিজ্ঞান মেলায়ও সে শীর্ষস্থান দখল করে। এর আগে রোবট তৈরি করে বিভাগীয় পর্যায়েও সাফল্য পেয়েছে এই মেধাবী ছাত্র।
কাসাবের স্বপ্ন শুধু রকেট তৈরি করেই থেমে থাকার নয়। সে চায় উচ্চশিক্ষা নিয়ে এই প্রযুক্তিকে আরও উন্নত করতে। তার ভাষায়, " যখন নাসা স্পেস এক্স , রাশিয়া যখন রকেট উৎক্ষেপণ করা শুরু করেছিলো আমি সে বিষয়ে লক্ষ্য রেখেছিলাম এবং আমি সে বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করা শুরু করি। তারপর আমি দেখি এসব বিষয় যদি বাংলাদেশে বাস্তবায়ন হয় বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে একটি উন্নত শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে উঠবে , সেজন্য আমি রকেট সায়েন্স বেছে নিয়েছি "।সে আরও জানায়, "আমাকে রাশিয়া বা আমেরিকার নাসায় গিয়ে প্রশিক্ষণ নিতে হবে। তারপর বাংলাদেশে ফিরে এ ধরনের প্রযুক্তি বাস্তবায়ন করতে চাই। এতে বাংলাদেশ একটি উন্নত শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাবে।"
কাসাবের এই অর্জনে গর্বিত তার বাবা-মা, স্কুলের শিক্ষক ও এলাকাবাসী। গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেছেন, "কাসাবের মতো মেধাবীরা দেশের ভবিষ্যৎ। তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব।"
বাংলাদেশে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি চর্চা বাড়ছে। কাসাবের মতো মেধাবীরা যদি সরকারি ও বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পায়, তবে দেশের প্রতিরক্ষা ও মহাকাশ গবেষণায় নতুন দিগন্ত খুলে যেতে পারে। এখন প্রশ্ন—এই কিশোরের স্বপ্ন কি পূর্ণ হবে? নাকি আর্থিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সীমাবদ্ধতায় হারিয়ে যাবে আরেকটি মেধা?