কুমিল্লার মুরাদনগরে ঘরের দরজা ভেঙে নারীকে ধর্ষণ ও বিবস্ত্র ভিডিও ধারণের অভিযোগ বিএনপি কর্মীর বিরুদ্ধে

নিজেস্ব প্রতিবেদক

ছবি : সংগৃহীত

কুমিল্লার মুরাদনগরে ঘরের দরজা ভেঙে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসা হিন্দু সম্প্রদায়ের এক নারীকে (২৫) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে ফজর আলী নামের স্থানীয় এক বিএনপি কর্মীর বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের বাহেরচর পাঁচকিত্তা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শুক্রবার (২৭ জুন) বিকেলে এ ঘটনায় ওই ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন।

অভিযুক্ত বিএনপি কর্মী ফজর আলী বাহেরচর পাঁচকিত্তা গ্রামের পূর্বপাড়ার শহীদ মিয়ার ছেলে।

তিনি বর্তমানে ইউনিয়ন বিএনপির পদ প্রত্যাশী বলে জানা যায়।

অভিযোগপত্রে ওই নারী জানান, তিনি গত ১৫ দিন আগে স্বামীর বাড়ি থেকে বাহেরচর পাঁচকিত্তা গ্রামে তার বাবার বাড়ি বেড়াতে আসেন। বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে অভিযুক্ত ফজর আলী তার বাড়িতে গিয়ে ঘরের দরজা খুলতে বলেন। এ সময় তিনি ঘরের দরজা খুলতে অস্বীকৃতি জানালে একপর্যায়ে ফজর আলী ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণ করেন।

ভুক্তভোগীর চাচি শ্বরসতী বর্মন বলেন, ‘পাশের বাড়িতে আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি পুজো চলছিল। আমি ঘর থেকে সেখানে যাব এমন সময় পাশের আরেক বাড়িতে কিছু শব্দ শুনতে পাই। আমি ভয়ে সেখান থেকে দৌড়ে গিয়ে পূজোর অনুষ্ঠান থেকে লোকজন ডেকে নিয়ে আসি। লোকজন উপস্থিত হয়ে দরজা খুলতে গিয়ে দেখে দরজা ভাঙ্গা।
পরে সকলের সহযোগিতায় আমরা ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করি।’

স্থানীয় বাসিন্দা সজীব বলেন, ‘গতকাল রাতে হিন্দু বাড়িতে একটা অনুষ্ঠান ছিল আমরা সেই অনুষ্ঠান দেখছিলাম। পরে রাত আনুমানিক সাড়ে দশটার দিকে আমাদেরকে ওই ভুক্তভোগীর চাচী গিয়ে জানায় তার পাশের বাড়িতে কি যেন হচ্ছে। তখন আমরা সবাই সেখানে গিয়ে ঘরের দরজা ভাঙ্গা দেখতে পাই। ঘরে প্রবেশ করে দেখি জোরপূর্বক ফজর আলী ওই নারীকে ধর্ষণ করছেন।

পরে আমরা সেখান থেকে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করি। অভিযুক্ত ফজর আলী গত ৫ই আগস্টের পর থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে সুসম্পর্ক তৈরি করে নিজেকে বিএনপি নেতা দাবি করে আসছেন। এলাকায় এমন কোন অপকর্ম নেই যে তিনি করেন নাই।’

ভুক্তভোগীর চাচা নকুল বর্মন বলেন, ‘এ ঘটনার পর থেকে আমরা খুব নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আজকে আমার ভাতিজির ঘরের দরজা ভেঙে তাকে ধর্ষণ করেছে। কালকে আমার ঘরে আমার পরিবারকে ধর্ষণ করতে পারে। আমরা এর সঠিক বিচার চাই আমাদের নিরাপত্তা চাই।’

 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ফজর আলীর মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ধর্ষণের ঘটনায় থানায় মামলা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান। তিনি বলেন, এই ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। অভিযুক্ত আসামিকে ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে অভিযুক্তকে আটক করা হবে।

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ