ছবি : সংগৃহীত
বিশ্বখ্যাত অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপ অ্যানোনিমাস গ্লোবাল সাউথ বাংলাদেশের বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিরুদ্ধে এক গভীর অভিযোগমূলক ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেছে। বার্তাটিতে বিমানের কিছু পাইলট, অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা, গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য এবং সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত একটি অপরাধ চক্রের বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়েছে।
অ্যানোনিমাসের দাবি, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কিছু পাইলট দীর্ঘদিন ধরে নারী সহকর্মীদের যৌন হয়রানি, ব্ল্যাকমেইল এবং শোষণের একটি নেটওয়ার্ক চালাচ্ছেন। এছাড়াও, বিমানের ফ্লাইট ব্যবহার করে স্বর্ণ পাচার, অবৈধ অর্থ লেনদেন এবং দুর্নীতির একটি জটিল চক্র চলছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
শুরুতেই তারা জানায়, এ বার্তাটি বাংলাদেশের ইউনূস সরকারের প্রতি, দেশের জণগনের প্রতি এবং সবচেয়ে বেশি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পাইলটদের প্রতি। বিমান বাংলাদেশ কে উদ্দেশ্য করে তারা বলে " আমরা আপনাদের নজরে রেখেছি, বছরের পর বছর ধরে আমরা দেখেছি"। তারা জনসাধারণকে জানায় " পাইলটরা আপনার রক্ষক নয়, দেশপ্রেমিক নয়, তারা ককপিটে লুকানো শিকারী , আপনারা স্বৈরশাসকের পতন ঘটিয়েছেন, এবার আকাশের নেকড়েগুলোকে নামিয়ে আনুন"।
প্রধান অভিযোগ হিসেবে তারা জানায়,
নারী পাইলট ও ক্রুদের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়ন , ককপিটে নারী সহকর্মীদের হয়রানি, ব্ল্যাকমেইল এবং শারীরিক নিপীড়নের অভিযোগ।
কিছু ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীদের ড্রাগ প্রয়োগ করে অসহায় অবস্থায় ফেলা হয় এবং অবৈধ ভিডিও ধারণ করে তা বিক্রি করা হয়।
তারা জানায়,
- বিমানের ফ্লাইট ব্যবহার করে বিদেশ থেকে স্বর্ণ পাচার করা হয়।
- শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার জন্য বিমানের নিরাপত্তা কর্মী ও অভ্যন্তরীণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশ রয়েছে।
- অবসরপ্রাপ্ত বিমান বাহিনীর কর্মকর্তা, পাইলট ইউনিয়নের নেতা এবং গোয়েন্দা সংস্থার (DGFI, NSI) কিছু সদস্য এই চক্রকে রক্ষা করছেন।
- অভিযোগ দমন করতে ঘুষ দেওয়া হয় এবং প্রমাণ ধ্বংস করা হয়।
যেখানে কর্তৃপক্ষ
- জাল লাইসেন্স অনুমোদন করে এবং বারবার সতর্কতা উপেক্ষা করে আসছে।
- দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তারা এই অপরাধ চক্রকে টিকিয়ে রাখতে সহায়তা করছেন।
অ্যানোনিমাস দাবি করেছে যে তাদের হাতে এই চক্রের বিস্তারিত প্রমাণ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে:
- ফ্লাইট ম্যানিফেস্ট ও অবৈধ পণ্য বহনের রেকর্ড।
- ঘুষের লেনদেনের ডিজিটাল রসিদ ও হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট।
- জাল লাইসেন্স প্রদানের দলিল।
- ভুক্তভোগীদের দেওয়া গোপন সাক্ষ্য।
অ্যানোনিমাস বাংলাদেশ সরকার, বিমান কর্তৃপক্ষ এবং জনগণের কাছে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে:
- অভিযুক্ত পাইলট ও কর্মকর্তাদের অবিলম্বে বরখাস্ত ও বিচারের আওতায় আনা।
- দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা।
- বিমানের অভ্যন্তরীণ তদন্ত করে চোরাচালান ও নিপীড়নের রুট বন্ধ করা।
- সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষকে পুনর্গঠন করা।
এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ও বিমান কর্তৃপক্ষের কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া এখনো পাওয়া যায়নি। তবে, অ্যানোনিমাস হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে তারা আরও সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ করতে পারে।
এই ঘটনা বাংলাদেশের বিমান খাতের গভীরে লুকিয়ে থাকা দুর্নীতি ও অপরাধের একটি অন্ধকার দিক উন্মোচন করেছে। এখন দেখার বিষয়, কর্তৃপক্ষ কীভাবে এই অভিযোগের জবাব দেয় এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে একটি স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করতে পারে।