ছবি : সংগৃহীত
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় হিরোশিমায় ব্যবহৃত বোমার চেয়েও ৬ গুণ বেশি শক্তিশালী বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের বিশেষ দূত ফ্রান্সেসকা আলবানিজ। তিনি অভিযোগ করেছেন, গাজা ধ্বংস করতে ইসরায়েল ৮৫ হাজার টন বিস্ফোরক নিক্ষেপ করেছে, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের হিরোশিমায় ফেলা পারমাণবিক বোমার তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে ফিলিস্তিনের পরিস্থিতি নিয়ে দেওয়া প্রতিবেদনে আলবানিজ এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ইসরায়েলকে অত্যাধুনিক অস্ত্র সরবরাহ করে অস্ত্র কোম্পানিগুলো রেকর্ড মুনাফা অর্জন করেছে। গাজায় চলছে আধুনিক ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ গণহত্যা, যার জন্য ইসরায়েলই দায়ী।
তিনি ফিলিস্তিনে মার্কিন-ইসরায়েলি সমর্থিত তথাকথিত 'গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন'-কেও কঠোর ভাষায় নিন্দা করেছেন। আলবানিজের মতে, এটি একটি 'মৃত্যুফাঁদ', যা ক্ষুধার্ত ও দুর্বল ফিলিস্তিনিদের হয় হত্যা অথবা বাস্তুচ্যুত করতে বাধ্য করছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় গাজায় অন্তত ১১৮ জন নিহত ও ৫৮১ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলি সমর্থিত ত্রাণকেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া ১২ জন বেসামরিক নাগরিকও রয়েছেন।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ৫৭ হাজার ১৩০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৩৪ হাজার ৫৯২ জন আহত হয়েছেন। তবে জাতিসংঘ ও স্বাধীন পর্যবেক্ষকদের মতে, প্রকৃত মৃতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
আলবানিজ তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে পরিস্থিতি ভয়াবহ। সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, ইতিমধ্যে ২ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি হতাহত হয়েছেন। তিনি ইসরায়েলের অবরোধ ও নির্বিচার হামলার নিন্দা করে বলেন, ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের তদন্ত জরুরি।
গাজার ধ্বংসস্তূপে এখনও লাখো মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছেন। খাদ্য, পানি ও চিকিৎসার অভাবে মানবিক বিপর্যয় আরও গভীর হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন আলবানিজ।
এই সংঘাতের সমাধান না হলে পুরো অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা আরও বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন তিনি।