ছবি : সংগৃহীত
ঢাকার রাস্তায় মোটরসাইকেল চালানোর কৌশল ও সতর্কতা
সঠিক মোটরসাইকেল নির্বাচন
ঢাকার রাস্তার জন্য কম ওজনের এবং ১৫০ সিসির মোটরসাইকেলগুলো আদর্শ। এগুলো দ্রুত গতিতে চলার পাশাপাশি যানজটের মধ্যে সহজে চলতে পারে। তেল খরচের বিষয়টিও মাথায় রাখা ভালো।
বাসা থেকে বের হওয়ার আগে গুগল ম্যাপ বা নেভিগেশন অ্যাপ ব্যবহার করে ট্রাফিকের সর্বশেষ অবস্থা জেনে নিন। সম্ভব হলে মূল রাস্তা এড়িয়ে কম যানজটপূর্ণ বিকল্প রাস্তা বেছে নিন। ঢাকার রাস্তায় বাস বা রিকশার হঠাৎ লেন পরিবর্তন সাধারণ ঘটনা, তাই সবসময় সতর্ক থাকুন এবং অন্যান্য গাড়ির গতিবিধি অনুমান করার চেষ্টা করুন। বাস, রিকশা এবং পথচারীদের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন, বিশেষ করে জনবহুল এলাকায়।
যদি তাড়া না থাকে, তাহলে সকালের ব্যস্ত সময় (সকাল ৮টা থেকে ১০টা) এবং সন্ধ্যার ব্যস্ত সময় (বিকাল ৫টা থেকে রাত ৮টা) এড়িয়ে চলুন। এই সময়গুলোতে যানজট চরমে থাকে। ভোরবেলা বা রাত একটু বাড়লে যানজট তুলনামূলক কমে।
নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন
ঢাকার রাস্তায় মোটরসাইকেল চালানো ঝুঁকিপূর্ণ। নিজের নিরাপত্তায় কোনো ঘাটতি রাখবেন না।
* হেলমেট: অবশ্যই ভালো মানের হেলমেট ব্যবহার করুন, এটি আপনার জীবন বাঁচাতে পারে।
* পোশাক: গ্লাভস, হাঁটু গার্ড, রাইডিং জ্যাকেট এবং বুট ব্যবহার করুন। এগুলো শুধু দুর্ঘটনা থেকেই নয়, ধুলাবালি এবং প্রতিকূল আবহাওয়া থেকেও রক্ষা করবে। উজ্জ্বল রঙের পোশাক পরিধান করুন যাতে অন্যান্য চালকরা আপনাকে সহজে দেখতে পায়।
ট্রাফিক আইন মেনে চলুন এবং সতর্ক থাকুন
* আইন ও গতিসীমা: ট্রাফিক আইন ও গতিসীমা মেনে চলুন। লেন স্প্লিটিং (গাড়ির মাঝখান দিয়ে বাইক চালানো) হয়তো সময় বাঁচায়, কিন্তু এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।
* সতর্কতা: ধরে নিন, অন্য ড্রাইভাররা আপনাকে দেখতে পাচ্ছে না। সর্বদা সতর্ক থাকুন, চোখ খোলা রাখুন এবং অন্য ড্রাইভারদের সম্ভাব্য পদক্ষেপ অনুমান করার চেষ্টা করুন। বড় গাড়ির পেছনে বা পাশে থাকা এড়িয়ে চলুন, কারণ এতে আপনার দৃশ্যমানতা কমে যায়।
*ব্রেকিং: মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার একটি বড় অংশ ঘটে বাঁক নেওয়ার সময় বা হঠাৎ ব্রেক করার সময়। সঠিক ব্রেকিং কৌশল অনুশীলন করুন এবং সবসময় উভয় ব্রেক একসাথে ব্যবহার করার চেষ্টা করুন।
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
* বাইকের রক্ষণাবেক্ষণ: নিয়মিত বাইকের সার্ভিসিং করান। ব্রেক, টায়ার প্রেশার, হেডলাইট, টেললাইট, ইন্ডিকেটর, হর্ন এবং ইঞ্জিন অয়েল নিয়মিত পরীক্ষা করুন।
* ফুয়েল: পর্যাপ্ত ফুয়েল নিয়ে বের হন। যানজটে আটকে থাকার সময় ফুয়েল শেষ হওয়া একটি বড় ভোগান্তি।
* খারাপ আবহাওয়া: বৃষ্টি বা খারাপ আবহাওয়ায় খুব সতর্ক থাকুন। রাস্তা পিচ্ছিল হতে পারে এবং দৃশ্যমানতা কমে যায়।
* শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতি: ঢাকার ট্রাফিকে বাইক চালানোর জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকা জরুরি, কারণ এটি বেশ ক্লান্তিকর হতে পারে।
ঢাকার মতো শহরে মোটরসাইকেল চালানো একই সাথে চ্যালেঞ্জিং এবং সময় সাশ্রয়ী। উপরোক্ত বিষয়গুলো মাথায় রেখে চললে আপনার যাত্রা অনেকটাই নিরাপদ ও আরামদায়ক হবে।