ছবি : সংগৃহীত
ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্রের THAAD (Terminal High Altitude Area Defense) সিস্টেমের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই যুদ্ধে THAAD মোতায়েন থাকা সত্ত্বেও ইরানের বহু ক্ষেপণাস্ত্র গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যে আঘাত হানতে সক্ষম হয়। এতে THAAD-এর সীমাবদ্ধতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, আর চীনের HQ-19 (Hong Qi-19) ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিশ্বের সামনে শক্তিশালী বিকল্প হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
সীমিত রেঞ্জ যা মাত্র ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত কার্যকর। এটি শুধু টার্মিনাল ফেজে ইন্টারসেপ্ট করতে পারে, অর্থাৎ ক্ষেপণাস্ত্রের শেষ পর্যায়ে শনাক্ত করতে পারে। একবার মিস করলে ব্যাকআপ নেই।
ধীরগতির ইন্টারসেপ্টর (২.৮ কিমি/সেকেন্ড), যা হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র (ইরানের ফাত্তাহ বা ইয়েমেনের হুথিদের প্যালেস্টাইন-২) থামানোর জন্য অকার্যকর।
যুক্তরাষ্ট্রের THAAD-এর সীমাবদ্ধতাগুলো কাটিয়ে চীনের HQ-19 বিশ্বের সবচেয়ে অত্যাধুনিক এন্টি-ব্যালিস্টিক মিসাইল (ABM) ব্যবস্থা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এর প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:
বিস্তৃত রেঞ্জ: যা ৩,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত টার্গেট শনাক্ত ও ধ্বংস করতে পারে।
অতিদ্রুত গতি: ১০ কিমি/সেকেন্ড (THAAD-এর চেয়ে তিনগুণ বেশি), যা হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র থামানোর জন্য আদর্শ।
উচ্চতা সক্ষমতা: ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত উড়ন্ত ক্ষেপণাস্ত্র ও নিম্ন কক্ষপথের উপগ্রহ ধ্বংস করতে পারে।
শক্তিশালী রাডার: টাইপ ৬১০A রাডার দিয়ে ৪,০০০ কিমি পর্যন্ত শনাক্ত করতে পারে (THAAD-এর AN/TPY-2 রাডারের চেয়ে বেশি)।
বহুমুখিতা: ব্যালিস্টিক মিসাইল, হাইপারসনিক গ্লাইডার ভেহিকেল (HGV), এমনকি স্যাটেলাইটও ধ্বংস করতে সক্ষম।
অত্যাধুনিক KKV (Kinetic Kill Vehicle):৬০জি পর্যন্ত গতিতে টার্গেটকে ধ্বংস করতে পারে, যা জটিল ও দ্রুতগতির ক্ষেপণাস্ত্র মোকাবিলায় কার্যকর।
এদিকে, THAAD-এর সীমাবদ্ধতা মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র THAAD-ER (Extended Range) প্রকল্প হাতে নিয়েছে, যা আরও শক্তিশালী রাডার, দ্রুতগতির ইন্টারসেপ্টর এবং বৃহত্তর রেঞ্জ নিয়ে আসবে। তবে এটি ২০৩০ সালের আগে চালু হওয়ার সম্ভাবনা নেই, এবং যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ববর্তী প্রতিরক্ষা প্রকল্পগুলোর ইতিহাস দেখলে এটি আরও বিলম্বিত হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের THAAD এখনও শক্তিশালী হলেও, HQ-19 এর চেয়ে বেশি গতি, রেঞ্জ, বহুমুখিতা এবং আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে এগিয়ে আছে। বিশেষ করে হাইপারসনিক থ্রেট মোকাবিলায় HQ-19-এর সক্ষমতা THAAD-কে ছাড়িয়ে গেছে। ফলে, বর্তমানে চীনের এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাই বিশ্বের সবচেয়ে অগ্রসর ও কার্যকর প্রযুক্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।