
ছবি : সংগৃহীত
সাবেক ঘনিষ্ঠ মিত্র ও বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবের ইলন মাস্কের নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের পরিকল্পনার তীব্র সমালোচনা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকাল রোববার এয়ারফোর্স ওয়ানে ওঠার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প মাস্কের এই উদ্যোগকে “হাস্যকর” বলে আখ্যায়িত করেন।
ট্রাম্প বলেন, “আমি মনে করি, তৃতীয় কোনো রাজনৈতিক দল গড়া একেবারেই হাস্যকর। যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিদলীয় ব্যবস্থাই শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে চলে আসছে। তৃতীয় কোনো দল তৈরি করলে তা শুধু বিভ্রান্তিই বাড়াবে।”
মাস্ক গত সপ্তাহান্তে এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া এক পোস্টে ঘোষণা করেন যে তিনি রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের বিকল্প হিসেবে “আমেরিকা পার্টি” গঠন করেছেন। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তিনি এই পরিকল্পনার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন।
ট্রাম্প ও মাস্ক একসময় ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিলেন। ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ে মাস্ক বড় ভূমিকা রাখেন—তাঁর প্রচারাভিযানে বিপুল অনুদান দেন এবং প্রযুক্তি খাতে সমর্থন জোগান।
ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসে “সরকারি দক্ষতা দপ্তর” চালু করেন, যার লক্ষ্য ছিল আমলাতান্ত্রিক ব্যয় কমানো। এই দপ্তরের প্রধান হিসেবে নিয়োগ পান মাস্ক। তবে ১৩০ দিনের ম্যান্ডেট শেষ হওয়ার আগেই ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে মতবিরোধের জেরে তিনি পদত্যাগ করেন। এরপর থেকে দুজনের সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে।
সম্প্রতি ট্রাম্প “বিগ বিউটিফুল বিল” নামে একটি করছাড় ও ব্যয় বৃদ্ধির বিলে সই করেন, যা নিয়ে মাস্ক তীব্র সমালোচনা করেছিলেন। এই বিলের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মাস্ক তাঁর নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দেন।
গতকাল ট্রাম্প তাঁর সামাজিক মাধ্যম “ট্রুথ সোশ্যাল”- এ একটি পোস্টে লিখেন, “ইলনকে পুরোপুরি পথভ্রষ্ট হতে দেখে আমার সত্যিই দুঃখ লাগছে। তিনি একসময় মহান ছিলেন, কিন্তু এখন রাজনীতিতে ঢুকে নিজেকে হাস্যকর অবস্থায় ফেলেছেন।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মাস্কের এই উদ্যোগ মার্কিন রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষত ট্রাম্প-বিরোধী রিপাবলিকান ও উদারপন্থী ভোটারদের মধ্যে। তবে দ্বিদলীয় ব্যবস্থায় তৃতীয় দলের সাফল্যের ইতিহাস খুব কমই আছে।
মাস্কের এই পদক্ষেপ কি ট্রাম্পের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে, নাকি তা রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি ক্ষণস্থায়ী ঘটনা হয়ে থাকবে—সেটিই এখন দেখার অপেক্ষা।