ছবি : সংগৃহীত
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা ঘিরে ঘটে যাওয়া সহিংসতা এবং বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। বুধবার গোপালগঞ্জে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণে অন্তত চারজনের প্রাণহানি ঘটে, যার জন্য নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দায়ী করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা গোপালগঞ্জের এই সহিংসতার বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, "আমরা আমাদের অঞ্চলের সব ঘটনাপ্রবাহ ঘনিষ্ঠভাবে অনুসরণ করি এবং যা ঘটছে তা বিবেচনায় নিই। প্রয়োজনে আমাদের পক্ষ থেকে যথাযথ পদক্ষেপ নিই।"
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে ভারতের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, "বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিষ্কার। আমরা বারবার বলেছি, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে আমরা এমন নির্বাচনকে স্বাগত জানাই; যা গণতান্ত্রিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সকল পক্ষকে এতে অন্তর্ভুক্ত করে।"
একজন সাংবাদিক উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং একটি প্রধান রাজনৈতিক দল আগামী বছরের শুরুতে বা ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে একমত হয়েছে। এ বিষয়ে রণধীর জয়সওয়াল ইতিবাচক মন্তব্য করেন।
ময়মনসিংহে প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ও সাহিত্যিক সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষদের স্মৃতিবিজড়িত বাড়ি ভেঙে ফেলার বিষয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, "সত্যজিৎ রায়ের বাড়ি নিয়ে বলতে পারি, আমরা বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেখেছি। আমাদের অবস্থান পরিষ্কার। আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে ইতিবাচক ও গঠনমূলক অংশীদারত্ব চাই।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা উভয় দেশের নেতৃবৃন্দের মধ্যে বৈঠক করেছি। আমাদের পররাষ্ট্রসচিব বাংলাদেশ সফর করেছেন। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টার মাঝে বৈঠকও হয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বেশ কিছু সহযোগিতার ক্ষেত্র রয়েছে, যার মধ্যে উন্নয়ন অংশীদারত্বও রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটেই ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের বিষয়টি দেখা উচিত।"
বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা দেওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রণধীর জয়সওয়াল জানান, "ভারতের সরকার বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভ্রমণ, মেডিক্যাল ইমার্জেন্সি এবং শিক্ষাসহ বিভিন্ন উদ্দেশ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ভিসা প্রদান অব্যাহত রেখেছে।"
গত বছরের জুলাই-আগস্ট থেকেই বাংলাদেশে ভারতের স্বাভাবিক ভিসা কার্যক্রম কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, যার ফলে অনেক বাংলাদেশি নাগরিককে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এ প্রসঙ্গে জয়সওয়াল বলেন, "আমরা বাংলাদেশে ভিসা দিচ্ছি। নানা কারণেই ভিসা দেওয়া হচ্ছে, উল্লেখযোগ্যসংখ্যক দেওয়া হচ্ছে।" তবে তিনি সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বাংলাদেশিদের ঠিক কত সংখ্যক ভিসা দেওয়া হয়েছে, সেই নির্দিষ্ট সংখ্যা জানাতে পারেননি। তিনি বলেন, "সঠিক সংখ্যাটি আপনাদের পরে জানাতে হবে। এটা আমাকে জেনে বলতে হবে।"