ছবি : সংগৃহীত
১৯৮২ সালে ইসরায়েলি জার্নাল *কিভুনিম*-এ প্রকাশিত ইনোন প্ল্যান মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের আধিপত্য বিস্তারের একটি কৌশলগত রোডম্যাপ। এই পরিকল্পনার রচয়িতা ওডেড ইনোন ছিলেন তেলআবিবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রাক্তন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। গোপন এই নথিতে আরব রাষ্ট্রগুলোর ভূ-রাজনৈতিক অখণ্ডতা ধ্বংস করে ইসরায়েলকে অপ্রতিদ্বন্দ্বী করে তোলার পরিকল্পনা উল্লেখ করা হয়েছে।
ইনোন প্ল্যানের মূল উদ্দেশ্য হলো আরব রাষ্ট্রগুলোর বিভক্তি।মূলত,সিরিয়া, লেবানন, ইরাক, জর্ডান ও মিশরকে ছোট ছোট দুর্বল রাষ্ট্রে পরিণত করা। জাতিগত ও ধর্মীয় বিভাজন ব্যবহার করে কুর্দি, শিয়া-সুন্নি, খ্রিস্টান-মুসলিম বিভেদকে উসকে দিয়ে গৃহযুদ্ধ সৃষ্টি করা।
-এবং,ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ। অর্থাৎ , বিভক্ত আরব রাষ্ট্রগুলো যেন কখনো ইসরায়েলের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে না পারে।
ইনোন প্ল্যানে সরাসরি ইসরায়েলি ভূ-সম্প্রসারণের কথা না থাকলেও, এটিকে "গ্রেটার ইসরায়েল" (নীল নদ থেকে ইউফ্রেটিস পর্যন্ত বিস্তৃত ইহুদি রাষ্ট্র) ধারণার সাথে যুক্ত করা হয়। ইরাক ও সিরিয়ার বিভক্তি, লেবাননের গৃহযুদ্ধ এবং ইরান-সৌদি প্রভাবের দ্বন্দ্বকে অনেক বিশ্লেষক এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন হিসেবে দেখেন।
বর্তমান প্রাসঙ্গিকতা টেনে আনলে,
আজও মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিতিশীলতা, ইরাক ও সিরিয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন, এবং ইয়েমেন-লিবিয়ার যুদ্ধে ইনোন প্ল্যানের ছায়া খুঁজে পাওয়া যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, পশ্চিম এশিয়ায় আমেরিকা ও ইসরায়েলের কৌশলগত জোট এই পরিকল্পনাকে পরোক্ষভাবে সমর্থন করছে।
ইনোন প্ল্যান শুধু একটি ঐতিহাসিক নথি নয়—এটি মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান রাজনৈতিক সংঘাতের একটি চাবিকাঠি। আরব বিশ্বের ঐক্য ভেঙে দেওয়াই এটির মুখ্য লক্ষ্য, যাতে ইসরায়েল নির্বিঘ্নে তার আঞ্চলিক আধিপত্য বজায় রাখতে পারে।