ছবি : সংগৃহীত
রাজধানীর উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতদের সঠিক সংখ্যা প্রকাশ এবং বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর পুরনো প্লেন বাতিলের দাবিতে মধ্যরাতে বিক্ষোভ শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) রাত ২টা থেকে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা কলেজ প্রাঙ্গণে অবস্থান নিয়ে এই বিক্ষোভ করছেন।
কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের একজন শিক্ষার্থী জানান, তারা নিহতদের মরদেহের সঠিক সংখ্যা জানতে পারছেন না। রাত ২টায় একটি অ্যাম্বুলেন্স কলেজে প্রবেশ করে কিছুক্ষণ পর আবার বের হয়ে যায়, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে সন্দেহ তৈরি করে। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করছেন যে, উদ্ধারকর্মীরা কী করছেন তা তারা বুঝতে পারছেন না এবং তাদের, অভিভাবক ও শিক্ষকদেরও ঘটনাস্থলে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।
শিক্ষার্থীরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর সাহস দেখাচ্ছেন বলে উল্লেখ করে বলেন, "বিচারহীনতা, অবহেলা ও দমননীতির বিরুদ্ধে আমাদের দাবি স্পষ্ট, আমাদের অবস্থান অটল। আমরা কালকেও দিনভর আন্দোলন চালিয়ে যাব।"
শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবিগুলো হলো:
* নিহতদের সঠিক নাম ও তথ্য প্রকাশ।
* আহতদের সম্পূর্ণ ও নির্ভুল তালিকা প্রকাশ।
* শিক্ষকদের গায়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের হাত তোলা—এই জঘন্য ঘটনার জন্য জনসমক্ষে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া।
* নিহত প্রতিটি শিক্ষার্থীর পরিবারকে বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া।
* বিমানবাহিনীর ব্যবহৃত ঝুঁকিপূর্ণ ও পুরনো প্লেনগুলো বাতিল করে আধুনিক প্লেন চালু করা।
* বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ পদ্ধতি ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিবর্তন করে আরও মানবিক ও নিরাপদ ব্যবস্থা চালু করা।
সর্বশেষ রাত সোয়া ৪টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আন্দোলন চলছিল।
উল্লেখ্য, সোমবার দুপুর ১টার পর রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ী এলাকায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনায় পড়ে। বিমানটি উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিধ্বস্ত হয় এবং সঙ্গে সঙ্গে বিমান ও স্কুল ভবনটিতে আগুন ধরে যায়। যে ভবনে এটি বিধ্বস্ত হয়, সেখানে বহু স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থী ছিল বলে জানা যায়, যাদের বেশিরভাগই হতাহত হন।
দুর্ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার অভিযান শুরু করে। উত্তরাসহ আশপাশের আটটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং হতাহতদের উদ্ধারকাজ শুরু করে। পরে উদ্ধার অভিযানে যোগ দেয় বিজিবি ও সেনাবাহিনী। বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারে করে হতাহতদের হাসপাতালে নেওয়া হয়।
ঘটনায় শোক জানিয়ে বার্তা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এছাড়া আজ রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। রাত সোয়া ৪টা পর্যন্ত ২৭ জন নিহতের সংবাদ নিশ্চিত হওয়া গেছে।