ছবি : সংগৃহীত
ফরিদপুরে জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় স্থাপন চুক্তির প্রতিবাদে ২৫ জুলাই , শুক্রবার জুমার নামাজের পর ফরিদপুর জেলা জমিয়তে উলামা বাংলাদেশ ও সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। জনতা ব্যাংক মোড় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে এসে সমাবেশে পরিণত হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন চকবাজার জামে মসজিদের খতিব ও সংগঠনের সভাপতি মুফতি কামরুজ্জামান। এতে বক্তব্য রাখেন জমিয়তে ইসলাম বাংলাদেশ ফরিদপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ইসমাইল হোসেন, ইমাম কল্যাণ ফাউন্ডেশনের সভাপতি মাওলানা মনসুর আহমেদ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক কাজী রিয়াজ, জমিয়তে উলামা বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা কবির আহমেদ, মুফতি মুস্তাফিজুর রহমান এবং মাহবুবুল ইসলাম কামাল।
বক্তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এমন উদ্যোগ অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানান। তারা জাতিসংঘের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে বলেন, মানবতার নামে জাতিসংঘ বিশ্বজুড়ে ছলচাতুরীর আশ্রয় নিচ্ছে এবং বাস্তবসম্মত কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। ফিলিস্তিন, ইরান ও মিয়ানমারের রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘের ভূমিকা রহস্যজনক উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, বছরের পর বছর ধরে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের ভূখণ্ডে অবস্থান করছে, কিন্তু জাতিসংঘ তাদের নিজ দেশে ফেরাতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে।
বক্তারা আরও বলেন, বিশ্বজুড়ে মুসলিম জনগণের ওপর নির্যাতন চললেও জাতিসংঘ নীরব ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। তারা অভিযোগ করেন, জাতিসংঘ এখন পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর স্বার্থরক্ষার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এমন একটি সংস্থাকে বাংলাদেশে কার্যালয় স্থাপনের অনুমতি দেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। মতপ্রকাশের অধিকার প্রচারের দাবি করলেও বাস্তবে সাধারণ মানুষ নিজ মত প্রকাশে বাধার সম্মুখীন হচ্ছে বলেও অভিযোগ ওঠে।
বক্তারা প্রশ্ন তোলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কীভাবে জাতিসংঘের কার্যালয়ের অনুমোদন দিল – তা জনগণ জানতে চায়। তারা বলেন, ফিলিস্তিনে মানবিক সহায়তার নামে ইসরায়েলি বাহিনী যে নির্যাতন চালাচ্ছে, তাতে জাতিসংঘের কার্যকর কোনো ভূমিকা নেই। তাই বাংলাদেশের জনগণ এমন মানবাধিকার কার্যক্রম চায় না। বক্তারা জাতিসংঘের অফিস স্থাপনের সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানান এবং তা না হলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন।
সমাবেশ শেষে ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনায় দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।