
ছবি : সংগৃহীত
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। ফ্রান্সের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে যে তারা ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে এই স্বীকৃতি দেবে, যা নেতানিয়াহু “সন্ত্রাসকে পুরস্কৃত করার নামান্তর” বলে বর্ণনা করেছেন।
এক সরকারি বিবৃতিতে নেতানিয়াহু সতর্ক করে বলেন, “এভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠিত হলে তা ইরানের একটি পুতুল রাষ্ট্রে পরিণত হবে এবং হবে ইসরায়েল ধ্বংসের জন্য একটি উৎক্ষেপণ কেন্দ্র।” তিনি আরও যোগ করেন, “এই ধরনের সিদ্ধান্ত শান্তিকে এগিয়ে নেওয়ার কোনো পথ নয়, বরং এটি আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা বাড়াবে।”
ইসরায়েলি নেতার এই মন্তব্য আসে ঠিক সেই সময়ে যখন গত সপ্তাহে ইসরায়েলি পার্লামেন্ট কনেসেট পশ্চিম তীর ও জর্ডান উপত্যকার ওপর “ইসরায়েলি সার্বভৌমত্ব প্রয়োগের” একটি ঘোষণামূলক প্রস্তাব পাস করেছে, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যাপক নিন্দা ডেকে এনেছিল।
ফরাসি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ফ্রান্স ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের সময় ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। এই পদক্ষেপকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কাছ থেকেও সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করছে প্যারিস।
আরব লীগ ইতিমধ্যেই এই সিদ্ধান্তকে “সঠিক ও সময়োপযোগী” বলে অভিহিত করেছে। অন্যদিকে, ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “এটি ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায্য অধিকারের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়বদ্ধতার প্রতিফলন।
১৯৬৭ সালের যুদ্ধের পর থেকে ইসরায়েল পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম ও গাজা উপত্যকা দখল করে রেখেছে। গত সপ্তাহে ইসরায়েলি পার্লামেন্টের প্রস্তাব এই অঞ্চলগুলোতে ইসরায়েলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টারই অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ফিলিস্তিনি নেতৃত্ব চায়, ভবিষ্যতের ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রে পশ্চিম তীর, গাজা ও পূর্ব জেরুজালেম অন্তর্ভুক্ত হোক। কিন্তু ইসরায়েলের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ এবং ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের বিরোধিতা দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের ভবিষ্যৎকে আরও অনিশ্চিত করে তুলেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এই সংকটের প্রেক্ষিতে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ইতিমধ্যেই এই ইস্যুতে জরুরি বৈঠক ডাকার কথা বিবেচনা করছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কূটনৈতিক উদ্যোগ এই সংকট নিরসনে কী ভূমিকা রাখতে পারে, তা এখন দেখার বিষয়।