
ছবি : সংগৃহীত
টেকনাফ স্থলবন্দর সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির চাঁদাবাজি ও হামলার কবলে পড়ে বন্ধ হয়ে গেছে, যা বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতি ও সীমান্ত নিরাপত্তাকে মারাত্মক হুমকির মুখে ফেলেছে। এই গোষ্ঠীটি কেবল বন্দরে চাঁদাবাজি করেই থেমে নেই, বরং নাফ নদীতে মাছ ধরার সময় বাংলাদেশি জেলেদের অপহরণ করে নির্যাতন করছে, মুক্তিপণ দাবি করছে এবং এমনকি হত্যাও চালাচ্ছে। এর ফলে হাজার হাজার উপকূলীয় জেলে পরিবার আজ বেকারত্ব ও অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে ।
আরাকান আর্মির সন্ত্রাসী তৎপরতার কারণে টেকনাফ সীমান্তে বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়ায় চোরাচালানীর পরিমাণ বেড়েছে। মাদক পাচার, অবৈধ অস্ত্র প্রবেশ এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর কার্যক্রম বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করেছে। সরকারের রাজস্ব ক্ষতির পাশাপাশি সমাজে অপরাধ, মাদকাসক্তি ও সহিংসতা বাড়ছে, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে ।
আরাকান আর্মি শুধু বাংলাদেশের জেলেদের জন্যই নয়, রোহিঙ্গা মুসলিমদের জন্যও একটি বড় হুমকি। এই গোষ্ঠীটি রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এখন তারা বাংলাদেশের সীমান্তে তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম বিস্তার করে দেশটির সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জ করছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এই পরিস্থিতি যদি নিয়ন্ত্রণে না আসে, তাহলে পুরো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঝুঁকিতে পড়তে পারে ।
বাংলাদেশ সরকার ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। সীমান্ত রক্ষীবাহিনী (বিজিবি) এবং কোস্ট গার্ডের পেট্রোলিং বাড়ানো হয়েছে, তবে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ছাড়া এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান কঠিন বলে মনে করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ইতিমধ্যে মিয়ানমার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে এই ইস্যুটি তুলে ধরেছে ।
আরাকান আর্মির সন্ত্রাসী কার্যক্রম কেবল স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রাই ব্যাহত করছে না, বরং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও জাতীয় নিরাপত্তাকেও ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এই সংকট মোকাবিলায় দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।