
ছবি : সংগৃহীত
মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গাজায় দুর্ভিক্ষের অবস্থা নিয়ে নিজের বক্তব্য পাল্টিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে একযোগে গাজায় দুর্ভিক্ষ নেই বলে দাবি করার পর এবার তিনি স্বীকার করেছেন যে, গাজায় সত্যিই ভয়াবহ খাদ্য সংকট চলছে এবং তা মোকাবিলায় নেতানিয়াহুর সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন ।
ট্রাম্প বলেছেন, “গাজায় ক্ষুধা চলছে, আমি নেতানিয়াহুর সঙ্গে আলোচনা করবো। ইসরায়েলের উচিত খাদ্য সাহায্য নিশ্চিত করা। গাজার মানুষ মাইল দূর থেকেও খাদ্য দেখতে পাচ্ছে, কিন্তু কাছে গিয়ে তা নিতে পারছে না।” তার এই মন্তব্য গাজার বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যেখানে ইসরায়েলের অবরোধের কারণে টনকে টন খাদ্য সহায়তা সীমান্তে আটকে রয়েছে, কিন্তু তা গাজাবাসীর কাছে পৌঁছানো যাচ্ছে না ।
গত ২৪ ঘণ্টায় অনাহারে শিশুসহ ১৫ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে, এবং অক্টোবর ২০২৩ থেকে এখন পর্যন্ত অপুষ্টিজনিত মৃত্যুর সংখ্যা ১০১ জনে পৌঁছেছে, যার মধ্যে ৮০ জনই শিশু।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, গাজার ২০% গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী নারী মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছেন ।জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গাজার এক-তৃতীয়াংশ মানুষ টানা কয়েক দিন ধরে কোনো খাবার পাচ্ছে না, এবং প্রায় ৫ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষসদৃশ পরিস্থিতিতে বাস করছে ।
ট্রাম্পের এই বক্তব্য পরিবর্তন আন্তর্জাতিক মহলে গুরুত্ব পেয়েছে, বিশেষ করে যখন ইসরায়েলের ত্রাণ বিতরণ পদ্ধতি নিয়ে ২৮টি দেশ যৌথ বিবৃতিতে নিন্দা জানিয়েছে। এদিকে, গাজায় আকাশপথে ত্রাণ পাঠানো হলেও তা অকার্যকর এবং বিপজ্জনক বলে সমালোচনা হচ্ছে, কারণ কিছু ক্ষেত্রে ত্রাণের প্যাকেট সরাসরি বেসামরিকদের উপর পড়ে আহতের ঘটনাও ঘটেছে ।
ট্রাম্পের এই অবস্থান পরিবর্তন গাজায় চলমান মানবিক সংকটের তীব্রতাকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে, কেবল আলোচনা নয়, দ্রুত ও কার্যকর ত্রাণ সরবরাহ নিশ্চিত করা এখন সবচেয়ে জরুরি, যাতে গাজাবাসী আরও প্রাণহানি থেকে রক্ষা পায়।